তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গতকাল রোববার জোর দিয়ে বলেছেন, যেভাবেই হোক, তিনি সৌদি কনস্যুলেটে নিহত সাংবাদিক জামাল খাসোগির ব্যাপারে নগ্নসত্য প্রকাশ করবেন। ইস্তাম্বুলে এক সমাবেশে এরদোয়ান বলেন, আমরা সুবিচার খুঁজছি। খাসোগি হত্যায় যেনতেন পদক্ষেপ নয়, নগ্নসত্য প্রকাশে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সৌদি সরকার এর মধ্যে স্বীকার করেছে, ইস্তাম্বুলে তাদের কনস্যুলেটের ভেতরে খাসোগিকে হত্যা করা হয়। এর এক দিন পরই তুর্কি নেতা এই বিবৃতি দিলেন।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেল আল জুবায়ের গতকাল রোববার খাসোগি হত্যার ঘটনাকে ‘সাংঘাতিক ভুল’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা এই অভিযান চালিয়েছে। জুবায়ের ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে খাসোগিকে হত্যা করা হয়নি। আমরা জানি না খাসোগির মৃতদেহ কোথায়।
এএফপির খবরে জানা যায়, তুরস্কের প্রেসিডেন্টের একটি সূত্র জানায়, গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এরদোয়ান। দুই নেতা একমত পোষণ করেছেন যে সবদিক থেকে খাসোগি হত্যার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে হবে। কাল মঙ্গলবার এ নিয়ে পার্লামেন্টে এরদোয়ানের বিবৃতি দেওয়ার কথা।
তুর্কি কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন, ২ অক্টোবর দুটি উড়োজাহাজে করে সৌদি আরব থেকে ১৫ জন ইস্তাম্বুলে আসেন। তাঁরা খাসোগি হত্যায় জড়িত। তবে রিয়াদ বলছে, ১৫ জনের মধ্যে একজন কয়েক বছর আগে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন।
সৌদি আরব বলছে, কনস্যুলেটের ভেতরে খাসোগির সঙ্গে তাঁদের বাদানুবাদ হয়। ‘হাতাহাতিতে খাসোগি খুন’ হন।
২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে ঢোকার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সৌদির খ্যাতনামা সাংবাদিক খাসোগি। শুরু থেকে তুরস্ক দাবি করে আসছে, খাসোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতর সৌদি চরেরা হত্যা করেছে। গত বছর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতা গ্রহণের পর রোষানলে পড়েন খাসোগি। তিনি দেশ ছেড়ে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ওয়াশিংটন পোস্ট-এ যুবরাজ মোহাম্মদের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে একের পর এক কলাম লেখেন। অভিযোগ উঠেছে, যুবরাজের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এ হত্যা সংঘটিত হয়েছে।