দেশের পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে

474

চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৪১৬ কোটি ৮০ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এটি গত বছরের একই সময়ে রপ্তানি হওয়া ৩৯৩ কোটি ৮১ লাখ ডলারের চেয়ে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি। শুধু প্রবৃদ্ধি নয়, যুক্তরাষ্ট্রে বাজার হিস্যায়ও এগিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ দখলে ছিল বাংলাদেশের। আর গত সেপ্টেম্বর শেষে সেটি বেড়ে ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তৈরি পোশাকশিল্প মালিকেরা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলছে বাণিজ্যযুদ্ধ। সে কারণে চীনে পোশাক উৎপাদনের খরচ বাড়তে পারে। তাই মার্কিন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান পোশাকের ক্রয়াদেশ দিতে বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে। চীনের পোশাকের ব্যবসা আসতে শুরু করায় ক্রয়াদেশ বাড়ছে দেশীয় কারখানায়। সে জন্য সামনের মাসগুলোতে রপ্তানি বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করছেন তাঁরা। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে ৬ হাজার ২৪৮ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। তারা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এবার ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি পোশাক আমদানি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তারা পোশাক আমদানি বৃদ্ধি করলেও শীর্ষ রপ্তানিকারক চীনের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও বাজার হিস্যা কমছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ২ হাজার ৪০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে দেশটি। গত বছরের একই সময়ের হিসাবে তাদের রপ্তানি কমেছে দশমিক ০৫ শতাংশ। আবার গত বছর শেষে চীনের বাজার হিস্যা ছিল ৩৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। বর্তমানে সেটি কমে ৩২ দশমিক ৯৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাজারটিতে দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক ভিয়েতনাম চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ৯২৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ। অবশ্য ২০১৭ সাল শেষে তাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ শতাংশের ওপরে। ভিয়েতনামের চেয়ে রপ্তানিতে বেশ পিছিয়ে থাকলেও প্রবৃদ্ধিতে অনেকটা কাছাকাছি চলে এসেছে তৃতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশ। যদিও রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই বাজারটিতে পোশাক রপ্তানি উত্থান–পতনের মধ্যে আছে। দীর্ঘ ১৫ মাস পর গত জানুয়ারিতে বাজারটিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। জানুয়ারিতে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল আড়াই শতাংশ। আট মাসের ব্যবধানে সেটি দ্বিগুণ হয়েছে। জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে মার্কিন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের অনেক ক্রয়াদেশ চীনের থেকে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও ভারতে যাবে। ইতিমধ্যে নতুন নতুন ক্রেতারা আমাদের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা শুরু করেছেন। পুরোনো ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাড়াচ্ছেন। ফলে আগামী বছর থেকে রপ্তানি আরও বাড়বে।’