বিএনপি’র নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত আগামী দু’দিনের মধ্যে অবসান হচ্ছে

425

তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিতে পাঁচ বছর আগে নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি এবারও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করে আসছিল। পাশাপাশি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি ছিল তাদের। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত না করার প্রেক্ষাপটে বিএনপিকে নিয়ে গেল মাসে গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে দুই দফা সংলাপে বসেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংলাপে খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ সাত দফা দাবি তোলেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। তাদের দাবি নিয়ে কোনো সমঝোতা না হওয়ার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে ২৩ ডিসেম্বর ভোটের দিন রেখে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। নির্বাচনের তফসিল ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছার প্রতিফলন বলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সন্ধ্যায় ২০ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর গুলশানের ওই কার্যালয়েই নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। অলি আহমেদ বলেন, “জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হল আমাদের প্রাধান্য, তাকে মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে আসবে।“২০ দলের অনেক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। যদিও সরকার বলছে যে, সকলের জন্য নির্বাচনের সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা মনে করি, এটা কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ, পত্রিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এখনো সকল দলের জন্যে সমান সুযোগ সৃষ্টি হয় নাই।”জোটগতভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত রোববারের মধ্যে জানাতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। অপরদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে আরও দুদিন সময় নিচ্ছে ২০ দল।এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এলডিপির প্রধান বলেন, “আমরা যারা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এই জোটে আছি, তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি লিখব। চিঠির ভাষা এমন হবে যে, যদি আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি সেক্ষেত্রে আমাদের দলীয় প্রতীকে অনেকে নির্বাচন করবে, আবার অনেকে ২০ দলের মূল দল বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করবে। যদি আমরা নির্বাচন করি।”নির্বাচন গেলে নিজে তার দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলে জানান অলি আহমেদ।অলি আহমদের সভাপতিত্বে সন্ধ্যা ৬টা থেকে এক ঘণ্টার এই বৈঠকে বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের আবদুল হালিম, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা এম এ রকীব, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা নুর হোসেইন কাসেমী, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের রিটা রহমান, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।