শ্রীলংকায় নির্বাচনের আগে দল বদলালেন রাজাপাকসে

371

এর মধ্য দিয়ে রাজাপাকসে নির্বাচনে সিরিসেনার দলের ব্যানারে নয় বরং নিজের নতুন দলের ব্যানারেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার ইঙ্গিত দিলেন। রোববার সকালে রাজাপাকসে এসএলপিপি’ তে যোগদানের ঘোষণা দেন। তার সঙ্গে ৪৪ জন সাবেক এমপি’ও সিরিসেনার দল ছেড়ে এ দলে যোগ দেন। দলটি ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠার করেছিলেন রাজাপাকসের ছোট ভাই বসিল।

দলটির এক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার দল এসএলএফপি’র সাবেক ৮২ এমপি’র মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৬৫ জন পক্ষ ত্যাগ করে এসএলপিপি তে যোগ দিতে পারেন।

এনডিটিভি ‍জানায়, গত বছর রাজাপাকসের রাজনীতিতে ফেরার মঞ্চ তৈরি করতে তার সমর্থকরা নতুন করে এসএলপিপি গড়ে তোলে। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় কাউন্সিলর নির্বাচনে দলটি মোট ৩৪০টি আসনের মধ্যে দুইতৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করেছে।

শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে গত কয়েকমাস ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। যার জেরে গত ২৬ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহ ও তার মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করেন। সেইসঙ্গে পার্লামেন্ট স্থগিত করে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন।

পার্লামেন্ট তার পক্ষে আছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর পদ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বিক্রমসিংহ। ওদিকে,‘বরখাস্ত’ প্রধানমন্ত্রীর বিপক্ষে সিরিসেনা সমর্থিত রাজাপাকসের সরকার পার্লামেন্টে পর্যাপ্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হচ্ছে, এমনটা স্পষ্ট হওয়ার পরপরই গত শুক্রবার  প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন।

শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজাপাকসে ২০০৫ সাল থেকে টানা একদশক দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তার আমলেই ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘তালিম টাইগার’ গেরিলাদের পরাজিত করে।

কিন্তু ক্ষমতায় থাকাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষ করে দেশটির সংখ্যালঘু তামিল জনগোষ্ঠির উপর নিপীড়নের অভিযোগে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাব সমালোচিত হয়েছিলেন।

যে কারণে ২০১৫ সালে অনেকটা অবিশ্বাস্যভাবে নিজের ডেপুটি সিরিসেনার কাছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যান তিনি। ওই নির্বাচনে বিক্রমসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) সিরিসেনাকে সমর্থন দিয়েছিল।

কিন্তু সম্প্রতি দিল্লির সঙ্গে ইউএনপি’র ঘনিষ্ঠতা এবং সিরিসেনাকে হত্যায় ‘ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থার জড়িত থাকার অভিযোগ’ নিয়ে দুই দলের ঘনিষ্ঠতায় ছেদ পড়ে। তারপরই রাজাপাকসের দিকে ঝুঁকে পড়েন সিরিসেনা।

শ্রীলঙ্কার ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ১১৩টি আসন প্রয়োজন।