বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন জেলায় হামলা

669

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণার দ্বিতীয় দিনে বিরোধী জোটের প্রার্থীদের প্রচারণায় হামলা, ভাঙচুর ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। আক্রান্ত হয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহর। হামলা হয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ও ড. আবদুল মঈন খানের প্রচার মিছিলেও। কোথাও কোথাও বিরোধী জোটের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নোয়াখালী সদর আসনে দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। হামলা সংঘর্ষের
সময় নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বগুড়ায় বিএনপি প্রার্থীর গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি প্রার্থীর গাড়িবহরে হামলা করেছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা।

খুলনায় বিএনপির প্রার্থী বকুলের সমর্থকদের ওপর হামলা ও যশোরে ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাজবাড়ীতে ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী সভা পণ্ড হয়ে যায় ক্ষমতাসীনদের হামলায়। ঝিনাইদহে বিএনপি প্রার্থীর গাড়িবহরে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মানিকগঞ্জে বিএনপি প্রার্থীর প্রচারণায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। ময়মনসিংহের ৩টি আসনে বিএনপির গণসংযোগ-মিছিলে হামলা, অফিস ভাঙচুর হয়।

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ হামলার খবর নিশ্চিত করলেও কারা গাড়িতে হামলা করেছে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি। গতকাল বেলা ১টার দিকে সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের দানারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান জানান, মির্জা ফখরুল নির্বাচনী গণসংযোগকালে দানারহাট এলাকায় পথসভা করছিলেন। এ সময় একদল লোক হঠাৎ এসে হামলা চালায়। তার গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের লোকজন বলে তিনি দাবি করেন। হামলায় ৬টি গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর হয়। এতে ১০ জন আহত হয়েছেন। ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা দুই-তিনটা গাড়ি ভাঙচুর হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্তের পর জানা যাবে।

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বিএনপি নেতার বাড়ি, ধানের শীষের নির্বাচনী অফিস, ও কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। গতকাল বেলা ১১টার দিকে কবিরহাট বাজারের বিভিন্ন স্থানে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে সকালে কবিরহাট বাজার জিরো পয়েন্টে নোয়াখালী-৫ আসনের বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ পথসভা করার কথা ছিল। সকাল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সেখানে জড়ো হতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে ঘোষবাগ থেকে বিএনপির মিছিল আসার সময় কবিরহাট দক্ষিণ বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সংঘর্ষ পুরো বাজারে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায়।

পরবর্তীতে হামলাকারীরা তার বাড়ি, বিএনপির নির্বাচনী অফিস ও বিভিন্ন দোকানে ভাঙচুর করে। হামলায় কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন, জাসাসের সভাপতি আবদুস সাত্তার, নরোত্তমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ, কবিরহাট পৌর যুবদলের সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন ও প্রবাসী বিষয়ক সম্পাদক গোলাম মোমিত ফয়সলসহ অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হন। তিনি আরো অভিযোগ করেন, সকালে পথসভায় আসার পথে উপজেলার ভূঁইয়ারহাট, শাহজীরহাট, কাচারিরহাট, কালামুন্সী বাজার, ব্যাপারীহাটসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপির মিছিলেও হামলা করা হয়। এদিকে বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে কবিরহাট উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সকালে কবিরহাট দক্ষিণ বাজারের নবারুণ একাডেমির সামনে বিএনপির মিছিল থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল, ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ইসমাইলসহ আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।

বিএনপির হামলায় জলিল, ইসমাইলসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ইসমাইলকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ হাছান জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সহিংসতা এড়াতে বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বগুড়ার ধুনটে বিএনপি প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে। এ সময় ব্যাপক ভাঙচুর এবং চারটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর জের ধরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। গতকাল ধুনট পৌর শহরের কলাপট্টি এলাকায় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এ ঘটনার শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ  মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি গ্রামে ধানের শীষের ভোট চাওয়ায় নাদিম ও মাসুম নামের দুই বিএনপি কর্মীকে মারপিট করে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। এ সময় যুবদল নেতা মুরাদ এর প্রতিবাদ করেন। এ ঘটনার জের ধরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রাত ১২টার দিকে মুরাদের বাড়িতে পেট্রোল দিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। মুরাদ জানান, অগ্নিসংযোগে তার পরিবারের লোকজন প্রাণে বাঁচলেও বাড়ির আসবাবপত্র ভস্মীভূত হয়। স্থানীয়রা জানান, বগুড়া-৬ (শেরপুর-ধুনট) আসনে বিএনপি প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ গতকাল সকালে ধুনটে নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন।

বেলা ১১টার দিকে চারটি জিপ এবং শতাধিক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে রাঙ্গামাটি গ্রামের যুবদল নেতা মুরাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। তার গাড়িবহর ধুনট পৌর শহরের কলাপট্টি এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সিরাজের গাড়িবহরে হামলা করে। গাড়িবহরে থাকা চারটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় এবং জিপসহ আরো ৮-১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। খবর পেয়ে ধুনট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ তার নেতাকর্মীদের নিয়ে হুকুম আলী বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেন। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। জিএম সিরাজ অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে তার গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা কুলখানি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। বর্তমানে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।

ময়মনসিংহ থেকে: ময়মনসিংহের ৩টি আসনের বিএনপির নির্বাচনী গণসংযোগ, মিছিল ও কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে ক্ষমতাসীন মহাজোটের প্রার্থী-সমর্থকরা।  এ সময় নির্বাচনী কার্যালয়, প্রার্থীর গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। গতকাল এসব পৃথক হামলায় আহত হয়েছেন প্রার্থী জাকির হোসেন বাবলুসহ কমপক্ষে ৩৫ জন নেতা-কর্মী।  মুক্তাগাছা আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ জাকির হোসেন বাবলু জানান, বিকেলে গণসংযোগকালে উপজেলার ৪নং কুমারগাতা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমার গাড়িসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এতে আমি ও ড্রাইভার আবদুল্লাহসহ প্রায় ১০ নেতাকর্মী আহত হন। তবে বিষয়টি অবগত নন বলে জানান মুক্তাগাছা থানার ওসি আলী আহম্মেদ মোল্লা। অপরদিকে ভালুকা উপজেলার বাটাজোড় বাজার এলাকায় বিএনপির প্রার্থী ফখর উদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চুর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা করে ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। ৯নং কাচিনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুরের নেতৃত্বে এ হামলা হয় বলে দাবি করেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এ সময় নির্বাচনী কার্যালয়ের  চেয়ার-টেবিল, টিভি ও আলমারি ভাঙচুর করা হয়। এতে ৫ নেতাকর্মী আহত হন বলে জানান ময়মনসিংহ-১১ ভালুকা আসনে বিএনপির প্রার্থী ফখর উদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চুর সমর্থকরা।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ভালুকা থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা এবং পাল্টাপাল্টি মিছিলকে কেন্দ্র করে একটু গণ্ডগোল হয়েছে। তবে এটা বড় কিছু না। এছাড়াও জেলার ফুলপুর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকা গতকাল বিকালে ধানের শীষ ও নৌকা সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হন। জানা যায়, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারোয়ারের পক্ষে বিকেলে ধানের শীষের একটি মিছিল বের হলে হামলা চালায় নৌকা সমর্থকরা। এ সময় দু’পক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে বাসস্ট্যান্ড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। কয়েকটি গাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করা হয়। এ সময় বিএনপি  নেতা ইসলাম উদ্দিন (৩৫), মোশারফ হোসেন (৫২), আবদুস ছাত্তার (৩৫), মিলন (৩৫), মোস্তফা কামাল খান (৩৫), পাপু (১৬)সহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।  ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জ-২ নির্বাচনী এলাকা কামারখন্দ উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘর এবং নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নেতাকর্মীদের মারপিট করা হয়েছে। সোমবার এসব ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরস্পরকে দায়ী করে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা। গতকাল জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু লিখিত বক্তব্যে বলেন, সোমবার বেলা ১২টার দিকে কামারখন্দ উপজেলা বিএনপি অফিস ভাঙচুর করে। সন্ধ্যায় শিয়ালকোলে বিএনপি নেতাকর্মীদের মারপিট ও জিব্রাইলের বসতবাড়ি ভাঙচুর করে। রাতে ধুকুরিয়া গ্রামে ইউনিয়ন যুবদল সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও তার গরুর খামারে অগ্নিসংযোগ করা হয়। অপরদিকে, সিরাজগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে, নিজেরা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অন্যের ওপরে দোষ চাপাতে চাচ্ছে। তারা হামলা ও মারপিটের অভিযোগ করলেও তাদের কোনো নেতাকর্মী হাসপাতালে ভর্তি হয়নি, অথচ আওয়ামী লীগের অন্তত ৪-৫ জন নেতাকর্মী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আওয়ামী লীগের অন্তত ১০ জন নেতাকর্মীকে মোবাইলে ও সশরীরে হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মেহেরপুরের গাংনীতে বিএনপির নির্বাচনী অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ও তাঁবু ছিঁড়ে ফেলে। আওয়ামী লীগ সমর্থকরা এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপির প্রার্থী জাভেদ মাসুদ মিল্টন। সংবাদ সম্মেলনে জাভেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, সোমবার সাহারবাটি এলাকায় বিএনপির প্রচারণা মাইক ভাঙচুর করে ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। গতকাল সকালেও নেতাকর্মীরা যখন বিএনপি অফিসে আসতে থাকেন, তখন ৮-১০ জন লোক হঠাৎ অফিসে হামলা চালায় ও নির্বাচনী তাঁবু ছিঁড়ে ফেলে।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শরীফুজ্জামান শরীফের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সীগঞ্জ পশুহাট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় শরীফুজ্জামানের দু’টি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়। হামলায় দু’জন আহত হয়েছেন বলেও বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সোমবার রাতে চুয়াডাঙ্গায় ফিরছিলেন ধানের শীষের প্রার্থী শরীফুজ্জামান শরীফ। রাত সাড়ে ৯টার দিকে শরীফুজ্জামানের গাড়িবহর আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সীগঞ্জ পশুহাট এলাকায় পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত তাদের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালায়। রাতে চুয়াডাঙ্গা প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করে বলেন, পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে। এ সময় সঙ্গে থাকা যুবদল নেতা হাবলু ও মিশু আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি। এদিকে, চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকাতেও বিএনপির প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান বাবুর নির্বাচনী মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সন্ধ্যায় জীবননগর উপজেলা শহরের চার রাস্তার মোড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ধানের শীষের মিছিলটিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ হামলা চালিয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।

খুলনা থেকে জানান, খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী) আসনের বিএনপির প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুলের সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছে খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগ নেতারা। সোমবার রাতে খালিশপুর থানার ১৫নং ওয়ার্ডের জংশন মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, ধানের শীষের পোস্টার লাগানোর সময় আওয়ামী লীগ নেতা নাজু, সুমন, আরিফ, জনি, রাজু ও মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তক্বির নেতৃত্বে ৫০-৫৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত যুবদল নেতৃবৃন্দের  ওপর হামলা করে। এ সময় ১৫নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা লিটন হোসেন লিটু ও রুহুল আমিন হাওলাদারসহ ৫-৭ জন গুরুতর আহত হন। এ ব্যাপারে খালিশপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

যশোর থেকে জানান, গভীর রাতে যশোর শহরের বিভিন্ন এলাকায় টানানো ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাত দু’টার দিকে শহরের চৌরাস্তা মোড়, এমএম আলী রোড, মাইকপট্টিসহ আশপাশের এলাকায় টাঙানো ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে সন্ত্রাসীরা। যশোর-৩ আসনের বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত জানান, সোমবার প্রতীক বরাদ্দের পর সন্ধ্যায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ধানের শীষের পোস্টার টানানো হয়। নির্বাচনী বিধি মেনেই প্রচারণার অংশ হিসেবে এসব পোস্টার সাঁটানো হয়। সোমবার রাত আনুমানিক দুইটার দিকে এসব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। তিনি বলেন, পোস্টার ছিঁড়ে তারা ক্ষান্ত হয়নি তারা তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী সভা পণ্ড করে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল বিকালে রাজবাড়ী বাজারের খলিফাপট্টিতে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, রাজবাড়ী পৌর বিএনপির উদ্যোগে শহরের খলিফাপট্টিতে ধানের শীষ প্রার্থী আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের নির্বাচনী সভা করার কথা থাকলেও সভা শুরুর পূর্বে দুপুরে ও বিকালে পরপর ২ বার কতিপয় দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় ঘটনাস্থলেই ১০ জন আহত হন। বিএনপি সূত্র জানায়, নির্বাচনী সভাকে বানচাল করতে দুপুর ৩টায় দুর্বৃত্তরা একবার সভাস্থলের চেয়ার ভাঙচুর করে ও পরে বিকালে সভা শুরুর পূর্ব মুহূর্তে আরেক দফা দুর্বৃত্তরা পুনরায় উপস্থিত জনতার ওপর হামলা চালালে ১০ জন আহত হন। এর আগে সোমবার গোয়ালন্দ উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে বিকালে এক নির্বাচনী সভা করার কথা থাকলেও সেখানেও দুর্বৃত্তদের হামলায় তা পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় সভাস্থল ভাঙচুর করা হয়।

নরসিংদী-২ পলাশ আসনে বিএনপির প্রার্থী ড. আবদুল মঈন খানের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা চালিয়েছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। গতকাল বিকালে নির্বাচনী এলাকার আমদীয়া ইউনিয়নের বেলাব নামক স্থানে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও ৪টি মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ছাড়া এ ঘটনায় ছাত্রদল ও যুবদলের ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পলাশ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, সকালে মঈন খান নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন। দুপুরে চরনগর্দী পার্টি অফিসে মতবিনিময় শেষে আমদীয়া ইউনিয়নে গণসংযোগ করতে গেলে বেলাব নামক বাজারে পৌঁছলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছাও মিয়ার নেতৃত্বে যুবলীগ, ছাত্রলীগের ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে গাড়ি বহরে হামলা চালায়।

গতকাল দুপুরে পৌর সদরের শক্তিপুর গ্রামে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে হামলা সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৩টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ, বিএনপি প্রার্থী ড. এমএ মুহিতের বাড়ির গেট, চেয়ার টেবিল,  জানালার গ্লাস, ১টি মোটরসাইকেল ও ১টি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। শাহজাদপুর উপজেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানায়, সকাল সোয়া ১১টার দিকে তিনি ও তার বড় ভাই শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এমদাদুল হক নওশাদ জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে (সাবেক বিএনপি অফিস) বসে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলাপ করছিলেন। এ সময় একদল যুবক মোটরসাইকেল বহর নিয়ে তাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। তাদের দু’ভাইকে বেধড়ক মারপিট করে। এর কিছু সময় পরই তারা বিএনপি প্রার্থী ড. এমএ মুহিতের শক্তিপুরের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও এ সংর্ষের ঘটনা ঘটে। তারা সরকারি দলের সমর্থকদের এ হামলার জন্য দায়ী করেন। এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, খবর পেয়ে আমাদের ফোর্স দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বড় কোনো অঘটন ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।

নাটোরে সিংড়ায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দাউদার মাহমুদের নির্বাচনী পোস্টারে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাতে উপজেলার ৮ নম্বর শেরকোল ইউনিয়নের ভাগনাগরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়াও একইদিন সন্ধ্যায় শুকাশ ইউনিয়নের জয়কুড়ি বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ  নেতাদের বিরুদ্ধে ধানের শীষের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও আমিনুল ইসলাম নামের এক যুবদল নেতাকে মারপিটের অভিযোগ করেন বিএনপির নেতারা।  শেরকোল ইউনিয়নের ভাগনাগরকান্দি গ্রামের উজানপাড়া ও ভাটোপাড়ায় প্রায় শতাধিক ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া বাজারে গতকাল সন্ধ্যার দিকে বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদের গাড়ি বহরে হামলা হয়েছে। নৌকার স্লোগান দিয়ে ধানের শীষের বহরে থাকা বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। হামলার সময় আসাদের সঙ্গে থাকা নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন।

নড়াইল-২ আসনের ধানের শীষের নির্বাচনী প্রধান কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এ অভিযোগ করেছেন, ২০ দলীয় জোটপ্রার্থী এনপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান এজেডএম ফরিদুজ্জামান। এ আসনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী মাশরাফি বিন মর্তুজা। ফরিদুজ্জামান অভিযোগ করেন, গতকাল  বিকালে নড়াইলের লোহাগড়া বাজার এলাকায়  তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে এ ভাঙচুর চালানো হয়। এ হামলায় অন্তত ৪ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে তার নির্বাচনী অফিসে হামলা চালানো হয়। এদিন বিকালেই এখানে কর্মিসভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ঘটনার পর ফরিদুজ্জামান বিকালে তার লোহাগড়ার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। বিকাল ৪টা পর বিএনপির প্রার্থী আফরোজা খান রিতা সাটুরিয়া উপজেলার কালুশাহ মাজার জিয়াতর করতে গেলে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম ও যুগ্ম আহ্বায়ক আ. খালেকের নেতৃত্বে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগ এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ বিএনপির নেতৃবৃন্দের। এ ঘটনায় ছাত্রদলের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সাবেক মন্ত্রী মরহুম হারুনার রশিদ খান মুন্নুর কন্যা আফরোজা খান রিতা গতকাল বিকালে তার নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় নামার আগে সাটুরিয়া কালুশাহ মাজার জিয়াতর করতে যান। ৪টার দিকে দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে আফরোজা খান রিতার বহনকারী গাড়িটি মাজারের রাস্তায় থামানোর পরপরই সেখানে জড়ো হয়ে থাকা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে গাড়িটি ঘেরাও করে।

এ সময় আফরোজা খান রিতাকে লক্ষ্য করে নানা ধরনের স্লোগান দেয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ। পরে বিএনপি প্রার্থী আফরোজা খান রিতাকে ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা হাতে হাত রেখে নিরাপত্তা বেষ্টনীতে কালুশাহ মাজারে নিয়ে যায়। পেছন পেছন ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরাও সেখানে যায়। আফরোজা খান রিতা মাজার জিয়ারত শেষে নিজের বহনকারী গাড়িতে উঠতে গেলে আবারও হট্টগোল বাধিয়ে দেয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ। এ সময় তিনি নিজের দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। একপর্যায়ে আফরোজা খান রিতার কর্মী ও সমর্থকদের লাঠিসোটা দিয়ে বেধড়ক মারধর করে যুবলীগ-ছাত্রলীগ। পরে সেখান থেকে আফরোজা খান রিতার গাড়িটিকে বিএনপি দলীয় নেতাকর্মী নিরাপদে নিয়ে যায়। সাটুরিয়া থানার সামনে রিতার গাড়িবহর থামিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের সাহায্য চান। পরে সেখান থেকে সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে প্রচারণায় গেলে, সেখানেও ছাত্রলীগ-যুবলীগ একই কায়দায় বাধা দেয় এবং নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেও পারেনি। তখন গাড়িবহরটি দরগ্রাম অভিমুখে যাত্র করলে পেছনে পেছনে ছাত্রলীগ-যুবলীগ স্লোগান দিয়ে বেশ কিছু দূর যায়। বাধা ও হামলার কারণে আফরোজা খান রিতা তার নির্ধারিত গণসংযোগ স্থগিত করে মানিকগঞ্জের গিলন্ডা এলাকায় তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। প্রচারণায় হামলার ঘটনায় জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানা গেছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় দলের অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বিকালে উপজেলার খালগোড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩টায় খালগোড়া বাজারের রাঙ্গাবালী জাহাগিরিয়া শাহ সুফি মমতাজিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসা মাঠে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের উপস্থিতিতে এক সভার আয়োজন করা হয়। পরে একইসময় ওই বাজারের বালুর মাঠে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মহিব্বুর রহমান মহিবের সমর্থকরাও সভার আয়োজন করেন। এতে দুই পক্ষের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিকাল সাড়ে ৩টায় তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়। দফায় দফায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী দুই পক্ষের সংঘর্ষে এনামুল ইসলাম লিটু, মজিবর রহমান, মশিউর রহমান শিমুল, সোহেল মাতুব্বর, জসিম হাওলাদার, বাবু তালুকদার, খালিদ বিন ওয়ালিদ, মহসিন মৃধা, রাজিব রহমান, জাকির, মিজানুর রহমান, শওকত প্যাদা, মহসিন হাওলাদার, মাসুম হাওলাদার, নাজমুল হোসেন, রাব্বি হাওলাদার, স্বপন ও নিয়াজ আকনসহ অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছেন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে আটক করেন