নাজমা শামসকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী, ফিরে গেলেন ৫০ বছর আগে

586

পাকিস্তানের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শ ধারণ করে লড়েছেন। উত্তাল সে সময়ে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে কাজ করেছেন একসাথে। নেতৃত্বে দিয়েছেন ইডেন কলেজে। সেই পুরানো সহযোদ্ধা ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী নাজমা শামসকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফিরে গেলেন ৫০ বছর আগে।

জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে বুধবার বিকেলে গণভবনে আসেন বাংলাদেশ স্কাউটসের গার্লস ইন স্কাউটিং বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নাজমা।

১৯৬৬-৬৭ সালে ছাত্রলীগ থেকে ইডেন কলেজের ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ওই নির্বাচনেই নাজমা শামস সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন ছাত্র ইউনিয়ন থেকে। রাজনৈতিক মত ভিন্নতা থাকলেও দুজনের সম্পর্ক এগিয়ে চলেছে বন্ধুত্বের হাত ধরে।

দুই বন্ধুর সাক্ষাতে প্রাণোচ্ছ্বল শেখ হাসিনার সামনে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন নাজমা শামসও। দুই জন একসঙ্গে ছবি তোলেন, গল্পে মেতে ওঠেন।

তাদের এ আনন্দঘন মুহূর্ত নিয়ে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।

পোস্টে তিনি লিখেছেন, উত্তাল দিনগুলোতে রাজপথে ছিলেন একসাথে। রাজনীতির আদর্শের মত ভিন্নতা ছিল। দেশের প্রশ্নে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথ কাঁপিয়েছেন। সেই সম্পর্ক এখনও অটুট আছে। শত ব্যস্ততার মাঝেও দেখা হলেই স্মৃতিচারণে মেতে উঠেন। কৈশোরের সেই দিনগুলোতে বারবার ফিরে যান। কিরকম ছিল সেই আন্দোলনের দিনগুলি, সেই সময়ের ছাত্র রাজনীতিসহ নানা খুনসুটি। এরই একজন বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হ্যাট্রিক জয়ে দেশের চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শিগগিরই শপথ নিবেন। এই শেখ হাসিনা এখন শুধু আর বঙ্গবন্ধু কন্যা, দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতি কিংবা দেশের প্রধানমন্ত্রীই নন। তিনি এখন পুরা বিশ্বের বিস্ময়।

তিনি আরো লিখেন, যিনি গতিশীল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে তৃতীয় বিশ্বের ভঙ্গুর অর্থনীতির একটি দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নতির শিখরে। বিশ্ব মোড়লরা এখন বাংলাদেশের দিকে অবাক হয়ে তাকায়। বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখে, সমীহ করে চলে। তা সম্ভব হয়েছে শুধু শেখ হাসিনার ক্যারিশমাটিক নেতৃত্বের কারণেই। ছবিতে আরেকজন যাকে দেখছেন তিনি প্রফেসর নাজমা শামস। বর্তমানে বাংলাদেশ স্কাউট গার্লস ইন স্কাউটিং ফোরাম জাতীয় কমিটির সভাপতি।

আশরাফুল আলম খোকন লিখেন, আজ গণভবনে এসেছিলেন ছাত্রজীবনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্ধীকে অভিনন্দন জানাতে। দেখেই একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরেন। তাদের মধ্যে সম্পর্কের এই উষ্ণতা দেখে অভিনন্দন জানাতে আসা সকলের উৎসুক দৃষ্টি তখন সেদিকে। একে একে ক্যামেরাগুলোর ফ্লাশলাইট জ্বলসে উঠলো। তখন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই মুখ খুললেন। জানালেন, তিনি যখন ইডেন কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন, তখন প্রফেসর নাজমা শামস ছিলেন জিএস। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন ছাত্রলীগ থেকে, আর নাজমা শামস ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন থেকে। কিন্তু সম্পর্কটা ছিল খুবই আন্তরিকতায় ভরপুর। সেই সম্পর্ক এখনো আছে।