আফগানিস্তানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আব্দুল কাইয়ুম মালিকজাদ বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক নবায়নের অংশ হিসেবে কাবুলে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন পুনরায় খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে একথা বলেন। বৈঠকের পরে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, দু’দেশের মধ্যকার বিদ্যমান দীর্ঘ ইতিহাস এবং গভীর সম্পর্কের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, তাঁর দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কের উত্তোরণ ঘটাতে আগ্রহী।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারি দেশগুলোর মধ্যে আফগানিস্তান অন্যতম উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তোরণের প্রশংসা করেন।
আফগান রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে এ সময় প্রধানমন্ত্রী ঢাকা এবং কাবুলের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এর প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত মূল্য দেয়।’
তিনি বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশ আফগানিন্তান থেকে প্রচুর পরিমাণে শুকনো খাবার আমদানী করে থাকে এবং আফগানিস্তানও বাংলাদেশ থেকে উন্নতমানের ওষুধ তাদের দেশে আমদানী করতে পারে।
বিগত সাধারণ নির্বাচনে তাঁর দলের বিপুল বিজয়ে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে আফগান রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ করে তিনি দুই দেশের চেম্বার অব কমার্স নেতৃবৃন্দের মধ্যে নিবিঢ় সম্পর্ক স্থাপনের ওপর জোর দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই জনগণ উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে পারে যে কারণে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে এবং তাঁর সরকার জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে অঙ্গীকারাবদ্ধ, যে স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দরিদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য তাঁর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির উল্লেখ করে বলেন, এই কর্মসূটির মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর শিক্ষার উন্নয়ন এবং বিপন্ন জনগণকে বিশেষ করে নারীদের সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের উন্নয়নের একটি চিত্র তুলে ধরে বলেন, স্বাধীনতার পরে পাকিস্তানের ১ রুপীর বিনিময় মূল্য ছিল ১ দশমিক ৫৬ টাকা আর এখন ১ টাকা ১ দশমিক ৬৬ রুপির সমান হয়েছে।
আফগান রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন, দু’দেশের মধ্যে ৫টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে এবং তাঁর দেশে গণতন্ত্রও এগিয়ে যাচ্ছে।
আফগান রাষ্ট্রদূত বলেন, তাঁর দেশ বাংলাদেশ থেকে আরো ওষুধ সামগ্রী আমদানীতে আগ্রহী।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।।