ফুলতলার রি-ইউনিয়ন স্কুলের শিক্ষক রিপনের কোচিং বাণিজ্য চলছে , কর্তৃপক্ষ দেখবেন কি

993

আবু হামজা বাঁধন , ডেক্স রিপোর্ট  :
কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ২০১২ সালে করা সরকারের নীতিমালা বৈধ বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে করা কয়েকটি পৃথক রিটের রায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ফলশ্রুতিতে সারাদেশব্যাপি কোচিং বাণিজ্য বন্ধে আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী সহ প্রশাসন তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনা জেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কোচিং বাণিজ্যে বন্ধে একাধিকবার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। তবে সব কিছুকেই উপেক্ষা করেই খুলনার ফুলতলা রি-ইউনিয়ন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক রিপন কুমার বৈরাগী দেধারছে কোচিং বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, ফুলতলার তাজপুরে শহিদ নামে এক ব্যক্তির ভবনের দ্বিতীয়তলা ভাড়া নিয়ে কোচিং ব্যবসা চালিয়ে আসছে শিক্ষক রিপন। দেশের প্রচালিত আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে অনেকটা বীরদর্পে রিপন বৈরাগী কোচিং চালিয়ে যাচ্ছে । আজ রোববার দুপুরে শিক্ষক রিপন সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সুকৌশলে কোচিং এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের গোপনে করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রিপনের কোচিং এর শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হয়। তাঁরা জানান প্রতি মাসে রিপন স্যার কে কোচিং ফি বাবদ ৫শ টাকা দিতে হয়। অন্যদিকে রিপন বৈরাগীর কোচিং এর মধ্যে বেশ কয়েকটি বেত দেখতে পাওয়া যায়। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানান, রিপন স্যার পড়া না পারলে বেত্রাঘাত করে থাকে। রি-ইউনিয়ন স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র আরমান এ প্রতিবেদককে বলেন, স্যারকে প্রতি মাসে ১ তারিখের মধ্যেই কোচিং ফি বাবদ ৫০০টা দিতে হয়।
এখানেই শেষ নয়, রিপন কুমার বৈরাগী বিদ্যালয়ের তাঁর কোচিং এর শিক্ষার্থীদের স্কুল ছুটির পর বাধ্যতা মূলক কোচিং-এ আসতে বাধ্য করে বলে স্থানীয় সূত্রে প্রকাশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, এ কোচিং ক্লাস ৬ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পানের থেকে চুন খসলেই বেধড়ক মারপিট করে। মার খেয়ে যদি কোন শিক্ষার্থী কোচিং-এ না আসে তবে স্কুলের পরীক্ষায় তাঁর মার্কস কমিয়ে দেয়।
কথা হয় রি-ইউনিয়ন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফুল্ল্য কুমার চক্রবর্তীর সাথে। তিনি জানান, রিপন স্যার যদি হাইকোর্টের নির্দেশনার পরেও যদি কোচিং পরিচালনা করেন তবে আমি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। অন্যদিকে কোচিং বাণিজ্যবন্ধে আমি সকল ধরনের সহযোগিতা করব।

রিপন কুমার বৈরাগী বলেন, আমি দীর্ঘ দিন কোচিং চালিয়ে আসছি। আগে কোন সমস্যা হয়নি। আমি কোচিং বন্ধ নীতিমালা জানি। অনুমতি নিয়ে পড়ানো যায়।

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যখন নতুন রুপে ঢেলে সাজাচ্ছে বর্তমান সরকার । তখন কোচিং পরিচালনা করে দেশের আইনকে তোয়াক্কা না করে রিপনের মত কিছু অসাধু শিক্ষক অবৈধ কোচিং বাণিজ্য করে টাকার পাহাড় গড়ে তুলছে। সেই সাথে বর্তমান সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর নেওয়া বিভিন্ন সুফল পদক্ষেপকে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে কতিপয় অর্থলোভি শিক্ষক। তবে কোন বলে বলিয়ান হয়ে শিক্ষক রিপন কুমার বৈরাগী দেধারছে কোচিং পরিচালনা করে আসছে তা আগামী প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।