ময়মনসিংহ সদরে ইউপি নির্বাচনের মাঠ উত্তাপ, নৌকার প্রচারনা তুঙ্গে, স্বতন্ত্রদের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর

222

ময়মনসিংহ থেকে আরিফুর রহমান সেতু/ জুয়েল ডি সানি

ময়মনসিংহের সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে আগামী ১১ই জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাধারন নির্বাচন। নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় ইতিমধ্যেই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। তবে তার মধ্যে সবচেয়ে জমজমাট প্রচারনা লক্ষ্য করা গেছে সদর উপজেলার ৫নং সিরতা ইউনিয়নে। সেখানে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন সাবেক ধর্ম মন্ত্রীর এ পি এস আলহাজ্ব আবু সাইদ। তার সাথে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বকুল। তাছাড়াও চশমা প্রতীক নিয়ে শহিদুল, ঘোড়া প্রতীক নিয়ে আলামিন এবং আনারস প্রতীক নিয়ে দেলোয়ার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।

আবু সাইদ একান্ত সাক্ষাৎকারে সি এই এন টিভি ২৪ কে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে তিনি আমাকে নৌকার মাঝি করেছেন। এলাকাবাসী সবাই খুশি তৃণমূলে এই নৌকা প্রতীক পেয়ে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহার ‘গ্রাম হবে শহর’ বাস্তবায়নের জন্য এই ৫ নং সিরতা ইউনিয়নবাসী অবশ্যই নৌকার জয় নিশ্চিত করবে। কারন জনগন এখন উন্নয়ন কিভাবে হয় তা জানে। তাই আগামী ১১ই জুলাই এখানে নৌকার বিপুল ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হবে ইনশাল্লাহ।

এদিকে ৬ নং চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক  রেজা এ মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান। তার সাথে আলাপনে তিনি সি আই এন টিভি ২৪ কে বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। আমাকে নেত্রী এই এলাকার নৌকার মাঝি হিসেবে পাঠিয়েছেন যাতে এই এলাকায় যতটুকু পিছিয়ে গিয়েছিল সেই ঘাটতি পুরন করে যেন দেশের স্বাভাবিক উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। তার কারন বি এন পি এর চেয়ারম্যান থাকাতে এই এলাকা উন্নয়নের স্বর্ণযুগেও পিছিয়ে পড়েছে। আমি এই নৌকা প্রতীকে আগামি ১১ই জুলাই নির্বাচিত হয়ে এই এলাকাকে সদর উপজেলার একটি মডেল ইউনিয়নে রুপান্তরিত করব।

এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন চশমা প্রতীকে আসাদুজ্জামান সরকার।  তিনি  বলেন, আমরা অনেক হুমকির মধ্যে রয়েছি। আগামী ১১ই জুলাই যাতে একটি সুষ্ঠু অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তার জন্য আমরা প্রশাসনের নিকট বিনীত অনুরোধ জানাই। এছাড়াও ঘোড়া প্রতীকে শিপন, আনারস প্রতীকে সেলিম এবং লাঙ্গল প্রতীকে আমীর হোসেন কাজী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

৭ নং চরনিলক্ষিয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচন করছেন তোতা মিয়া। অন্যান্য ইউনিয়নে নৌকার অবস্থান ভালো হলেও এখানে দেখা যায় মুদ্রার উলটো পিঠ। তৃনমূল আওয়ামীলীগের কর্মীরা সবাই ক্ষুব্ধ তোতা মিয়ার আচরনে এবং তার একটাই কারন তিনি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে নির্বাচন করছেন জামাত বি এন পির লোকজনদের নিয়ে। এ বিষয়ে তার কাছে মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সরেজমিনে ইউনিয়নের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা বাজারে গিয়ে দেখা যায় সেখানে আনারস প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে সতন্ত্র প্রার্থী ফারুকুল আহমেদ রতন এর নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়ে সতন্ত্র প্রার্থী ফারুকুল আহমেদ রতন  সি আই এন টিভি ২৪ কে বলেন, আমি এবং আমার কর্মী সকলেই এখন আতংকে রয়েছেন। আমি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি এবং আমার কর্মী ঠিকমত উঠান বৈঠক পর্যন্ত করতে পারছি না। আমি এই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক। তিনি ( আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী) তৃনমূল এবং ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে জামায়াত সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্বাচন করছেন যার ফলে স্থানীয় সকল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী আমার সাথে কাজ করছে। আওয়ামীলীগ কখনই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সমর্থন করে না। প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের নিকট আমার একটাই দাবি এইসব সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করে একটি অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন যাতে জনগন ভোট উৎসবে অংশগ্রহন করতে পারে।