দ্রুতবেগেই এগিয়ে চলছে খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ 

313
মোঃ আল আমিন খান, খুলনা ব্যুরো   
বৃহস্পতিবার সকালে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের রেস্ট হাউস পারিজাতে রেল বিভাগ ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছিলেন, ২০২২ সালের মধ্যেই মোংলা-খুলনা রেললাইন চালু হবে। সমুদ্রবন্দর মোংলার সক্ষমতা বাড়াতে সরকার খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেছিলেন, খুলনা-মোংলা রেলপথে যাত্রী পরিবহনসহ মোংলা বন্দরের মালামাল পরিবহন করা হবে। এছাড়া উত্তর অঞ্চলের পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা হয়ে ভারতের শিলিগুড়ির সঙ্গে এ রেল যোগাযোগ সরাসরি সংযুক্ত হবে। এর ফলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়বে। এর ফলে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী বাড়বে।দ্রুতবেগেই এগিয়ে চলছে খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ। সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে শতকরা ৫৫ শতাংশ। রূপসা রেলসেতু এখন স্বপ্নের খোলস থেকে বেরিয়ে রূপ নিয়েছে দৃশ্যমান বাস্তবতায়। বহুদূর থেকেও সেতুর অবয়ব চোখে পড়ছে। দীর্ঘদিনের লালন করা স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। অধরা স্বপ্ন বাস্তবায়ন দেখে বেজায় খুশি খুলনাঞ্চলের মানুষ। সেতুর নির্মাণযজ্ঞ দেখতে প্রতিদিনই রূপসার দু’পাড়ে অসংখ্য মানুষ ভিড় করছেন। স্বপ্নের খাঁচা ছেড়ে বেরিয়ে আসছে রূপসা রেলসেতু। নির্মাণযজ্ঞ, শ্রমিক ও প্রকৌশলীদের দৌড়ঝাঁপ, বড় বড় যন্ত্রপাতির শব্দে মুখর গোটা এলাকা। বলতে গেলে খুলনার রূপসা পাড়ে কর্মযজ্ঞের উৎসব চলছে। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রতিদিনই এগিয়ে চলছে স্বপ্নের বিনির্মাণ। ইতোমধ্যে ৯২৮টি পাইলের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৮৭৬টির। সেতুর ৫৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। গ্লোবাল খুলনার আহ্বায়ক ও প্রতিষ্ঠাতা শাহ মামুনুর রহমান তুহিন বলেন, দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলার সক্ষমতা বাড়াতে খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এই রেলপথ দিয়ে যাত্রী পরিবহনসহ মোংলা বন্দরের মালামাল পরিবহন করা হবে। মোংলা থেকে সরাসরি পণ্য নিয়ে ট্রেন যাবে ভারত-নেপাল ও ভুটানে।তিনি বলেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দরে আরও গতি সঞ্চার হবে। বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সহজে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন। এতে দেশের রাজস্ব বাড়বে। খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটির কাজ ৩টি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি রেলসেতু, অপরটি রেললাইন এবং অন্যটি টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং। খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৮টি স্টেশন হচ্ছে। স্টেশনগুলো- ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদ নগর, কাটাখালী, চুলকাঠি, ভাগা, দিগরাজ ও মোংলা। খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে রেললাইনের জন্য ১ হাজার ১৪৯ কোটি ৮৯ লাখ এবং সেতুর জন্য ১ হাজার ৭৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। বাকী টাকা জমি অধিগ্রহণে ব্যয় করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন (জিওবি) ও ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় এই রেলপথটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টাব্র রূপসা নদীর ওপর মূল রেলসেতুর কাজ সম্পন্ন করছে।