আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছেড়ে অন্যত্র যেতে চাচ্ছে না মণিরামপুরের ৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

306

শামছুজ্জামান মন্টু, স্টাফ রিপোর্টার
“জেএসসি/এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র” আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছেড়ে অন্যত্র যেতে চাচ্ছেননা মণিরামপুর উপজেলার ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকটি স্কুলকে কেটে নিয়ে মণিরামপুর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া পাঁচকাটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে পাশ^বর্তী স্কুল সমুহের প্রধান শিক্ষকদেরকে মণিরামপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আহসানউল্লাহ শরিফী তাঁর নিজ কার্যালয়ে ডেকে স্কুলের খালি প্যাডে সীল-স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় (কেন্দ্র কোড: ৪১৯) ঐ কেন্দ্রের সীমান্তবর্তী এলাকা মণিরামপুর উপজেলার পাঁচকাটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুলসী দাস মল্লিক, নেবুগাতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন মল্লিক, পাঁচকাটিয়া পাঁচবাড়িয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চৈতন্য বিশ^াস, কে.এইচ.এন. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান, দিগঙ্গা-কুচলিয়া-হরিদাসকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় কান্তি বিশ^াস বলেন, আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছেড়ে অন্যত্র যেতে চাচ্ছিনা মণিরামপুর উপজেলার ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আমাদের বিদ্যালয়ের সভাপতি ও আঞ্চলিক শিক্ষানুরাগীতথা অভিভাবকদের সম্মতিতে আড়পাড়া সেন্টার কোড ৪১৯নং কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অংশগ্রহন করে আসছি। বিধায় তাদের সম্মতি না নিয়ে আমরা যদি ব্যক্তিগত ভাবে সম্মতি জ্ঞাপন করি তাহলে আমারা সমস্যায় পড়তে পারি। আলোচনার এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসানউল্লাহ শরিফী আমাদেরকে বলেন, মণিরামপুর উপজেলার কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অভয়নগরের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে পারবেনা। তারা নতুন কেন্দ্রে না যাবার কথা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি আমাদের কথায় কর্নপাত না করে খালি প্যাডে সীল ও স্বারক্ষর করে দিতে বলেন। যা লেখার আমি লিখে নিবো। আমরা পরবর্তীতে কোন সমস্যায় পড়ি কিনা এই ভয়ে খালি প্যাডে সীলসহ স্বাক্ষর করেছি। তবে আমরা এতদিন যাবত আঞ্চলিক গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অভিভাবকদের সম্মতিতে শন্তিপূর্ণভাবে এযাবত এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় অংশ করে আসছি। আজ আমরা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে এই অভিযোগ করছি। এসময় নির্বাহী কর্মকর্তা প্রতিষ্টানের প্রধানদের কথায় কর্ণপাত না করেই খালি (ব্লাংক) প্যাডে সীল ও স্বাক্ষর প্রদান করে দিয়ে যেতে বলেন, যেটা সম্পূর্ণ অবৈধ। এব্যপারে কে.এইচ.এন. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আমাকে ডাকা হলে আমি বলেছিলাম জেএসসি ও এসএসসি আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (কেন্দ্র কোড: ৪১৯) থাকতে চাই এবং আগামীতে দেখবো। এসময় ইউএও স্যার আমাকে ঝামেলা না করে প্যাড দিতে বলেন। আমার প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মহোদয়ের সাথে কথা বলার জন্য সময় চাইলেও তিনি সময় দিতে চাননি এবং ঐরাতেই পাঁচবাড়িয়া পাঁচকাটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীকে দিয়ে আমার নিকট থেকে খালি প্যাডে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে যান। আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক কমল কান্তি বিশ্বাস বলেন, আমার স্কুলের কেন্দ্রে অভয়নগর উপজেলার ৮টি এবং মণিরামপুর উপজেলার ৭টি স্কুলের ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিতে আসে। মণিরামপুর উপজেলার ঐ ৭টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাঁর দপ্তরে প্যাড ও সীল নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু আমি ঐ প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে জানতে পারি ঐ ৭টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ অন্যত্র কেন্দ্র নিয়ে যেতে দ্বিমত পোষণ করেছেন। গাবখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পরীক্ষা কেন্দ্র বিষয়ে একটি মিটিংয়ের জন্য প্রতিষ্ঠানের সীল ও প্যাড সাথে করে আনতে বলেছিলেন। আমি মন্ত্রি মহোদয়ের ডাকে জরুরি সভায় গিয়েছিলাম যে কারনে ঐ মিটিংয়ে যেতে পারিনি। তিনি আরও বলেন আড়পাড়ায় যে কেন্দ্রটি আছে আমি ঐ কেন্দ্রেই থাকতে চাই। মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলের খালি প্যাডে প্রধান শিক্ষক গণের স্বাক্ষর বিষয়টি আমি কিছু জানিনা, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আপনারা কথা বললে ভালো হয়, যেহেতু বিষয়টি আমার না। পরীক্ষা কেন্দ্রে বিষয়টি মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসানউল্লাহ শরিফীর নিকটে জানতে তাঁর মুঠোফোনে ০১৭৩৩০৭৪০৩৯ নম্বরে বিকাল ৪.৩০টা থেকে ৬টা পর্যন্ত কয়েকটি নম্বর থেকে বারবার চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।