হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলা মামলার রায় দুপুর ১২টায়, নিরাপত্তার চাদরে আদালত পাড়া

164

গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ দুপুর ১২টায়। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করবেন। ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম সরোয়ার খান জাকির এ তথ্য জানিয়েছেন। রায়কে কেন্দ্র করে আদালত চত্বর ও এর আশপাশে এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। র‌্যাব, পুলিশ ও সাদা পোশাকের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা পুরো এলাকা নজরদারিতে রেখেছেন।

পুলিশ-র‌্যাবের সমন্বয়ে রাজধানীতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুরান ঢাকার বেশ কয়েকটি রোড়ে পথচারি চলাচল সীমিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে আদালতে প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে র‌্যাব ও পুলিশের নিরাপত্তা চৌকি। এছাড়া দেহ তল্লাশি করা হচ্ছে। বুধবার সকাল থেকেই পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় এ চিত্র দেখা গেছে।

পুলিশ জানায়, সব ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মাঠে কাজ করছে তারা। পুরো এলাকায় নিরাপত্তা বলয় করেছে। রায়কে কেন্দ্র করে কেউ যাতে ন্যুনতম বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য এতো আয়োজন।

আসামিদের আদালতে হাজির করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট হাজতখানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক মইনুল ইসলাম জানান, হলি আর্টিজান হামলার আসামিরা কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার আছেন। সেখান থেকে সকাল ৯টায় আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে। এরপর আদালতের নির্দিষ্ট সময়ে এজলাসে উঠানো হবে। রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে তাদের আবারও কারাগারে পাঠানো হবে।

২০১৬ সালের ১লা জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই দিন রাত পৌনে ৯টার দিকে সশস্ত্র পাঁচ জঙ্গি বেকারিতে ঢুকে নির্বিচারে গুলি করে ২২ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে হত্যা করে যার মধ্যে ৯ জন ইতালিয়ান, সাত জন জাপানি, এক জন ভারতীয় নাগরিক। জঙ্গিদের দমনে অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। জঙ্গিরা বেকারিতে যাওয়া অতিথিদের রাতভর জিম্মি করে রাখে। পরদিন সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সেনাবাহিনী কমান্ডো অভিযান- অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিচালনা করে তাদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি করে। অভিযানে পাঁচ জঙ্গি ও একজন বেকারির শেফ নিহত হন। এছাড়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হন আরও একজন বেকারিকর্মী।

গত ১৭ই নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবর রহমান রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আজ রায়ের দিন ধার্য করেন। নৃশংস ওই হামলায় নিহতদের স্বজনরা চান, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক জড়িতদের, যেন এমন ঘটনা আর কখনও না ঘটে। জঙ্গিবাদ দমনের স্মারক হয়ে উঠুক এই রায়। এতে প্রতিফলিত হোক ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর প্রত্যাশা।