কোমলমতি শিশুদের দেহ ছিড়ে খাচ্ছে পুরনো শুকুন, জননীকূলের ইজ্জত জীবনের নিরাপত্তা কোথায়

181

 উৎপল ঘোষ,  ক্রাইম রিপোর্টার :

মাতৃকূল নিরাপত্তা সংকটে ধুকছে। দেশের সর্বত্র ধর্ষণ এবং ধর্ষণেরপর হত্যা, প্রতিবাদ করলে পুড়িয়ে কণ্ঠরোধ করা, নতুবা হাত পা ভেঙ্গে দেওয়া বা কুপিয়ে জখম করা এই জঘণ্য নিত্যকার ঘটনা সচেতন সব অভিভাবক মহলে হতাশা উৎকণ্ঠা নেমে এসেছে। নর জানোয়ারেরা তিন থেকে ষোল বছরের শিশুদের ধর্ষণ করে রক্তাক্তকরছে। ধর্ষকদের মধ্যে ৮০ ভাগ বয়স্ক ব্যক্তি। তার পিতৃতুল্য, মাদ্রাসা ও ¯ু‹লের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, ইমাম , পুরোহিত, প্রধান শিক্ষক, সৎ বাবা, পালিত বাবা, শ্বশুর, খালু, ডাক্তার, পুলিশ, ডিপার্টমেন্টের কর্তা ইত্যাদি। পচা বিবেকের লেবাসী এই মাংশাসী শকুন নর জানোয়ারদের লম্পট্যের ফাঁদে আটকে গেছে মায়ের জাতের ইজ্জত আর জীবন। সারা দেশ শোকে মর্মপীড়ায় স্তব্ধ। দৈনন্দিন বেদনা হত খবরের শিরোনাম দেখে সন্তান সন্তুতিদের বাইরে পাঠাতে চাইছেন না অভিভাবকেরা। অভয়নগরের তিন বছরের শিশু সহ সাত শিশু ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যা হয়েছে এক দিনমজুর কিশোরী।
কত নিচে নামতে পারে বুদ্ধিমান শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ। লাজ লজ্জা বিবেক বিবেচনা পচে গেছে। বর্ণচোরা ধর্মের ছালা নামাবলি গতরে ঝোলান পৈশাচিক বয়স্ক মতিভ্রষ্টদের। জালিম অসুরদের জলুম কোনো অবস্থায় লাগাম টেনে থামানো যাচ্ছে না। আলোচিত হায়েনারা পিতৃতুল্য গুরুজন এরা ফসল সুরক্ষায় ক্ষেতের বেড়ার মতো। তারা পাবে শ্রদ্ধা সম্মান আর শিশু নারীকূল পাবে ¯েœহ মায়া মমতা ও মর্যাদা। সেই বেড়ায় যখন ফসল খেতে থাকে তখন নিরুপায় উপায়হীন অবলারা কোথায় পাবে আশ্রয়?
বলতে চেয়েছি, কাক কাকের মাংশ খায় না। জানোয়াররা রতি চরিতার্থে তাদের শিশুদের প্রতি নজর দেয় না। ব্রেক ফেল গাড়ীর মতো অপ্রতিরোধ্য, বেপরোয়া ওরা খাচ্ছে এবং কুনজর দিচ্ছে নিলজ্জা বেহায়ার মতো পায়রা মোরগ তাদের শিশুদের লালন-পালন করে এবং শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। কখনও বাচ্চাদের প্রতি কুনজর দেয় না। জোড়ের মায়াটা ব্যতীত। মাদ্রাসায় ধর্মীয় বিষয় অনুবাদ করে ব্যাখ্যা করা হয়। ¯্রষ্টা অবতার এবং হাদীস কোরআনের পরম বাণী পড়ানো হয়। আর ধর্মধাম অর্থ্যাৎ ্উপাসনলায়, মসজিদ, মন্দির ধার্মিকদের চিত্তের সবটুকু ভক্তি উৎসর্গ করে প্রার্থনা করার পবিত্র স্থান। ইমাম , পুরোহিত, সে ঘরের পবিত্রতা ধ্বংস করে চরম গ্লানী লেপন করেছে। জালিমের জুলুম রুখে দেবার বিশ্ব অবতারের নির্দেশনা রয়েছে। যুগে যুগে সব অবতার জুলুম জালিম ও অসুর নিধনের যুদ্ধ করেছেন। নর-নারী কেনা বেচা প্রথা রহিত করা সহ কৃতদাস ও দাসী জুলুমের গহব্বর থেকে তুলে এনে বেশি অধিকার দিয়ে মুক্তি দেন যা বর্ণনাতীত। বিশ্ব অবতার ঘোষণা দেন মায়ের পদতলে সন্তানের স্বর্গ জান্নাত ও নরক আগুণ। সেই মাতৃকুলের শরীরচিবিয়ে কামড়ে খাচ্ছে লেবাসধারী রাম পাঠা খাটাস । যার লজ্জা নেই তার কোনো ধর্ম ও মানবতা নেই। সে বুনো বনমানুষ তার স্থান সভ্য সমাজে হতে পারে না। ওরা জননীকুলের দুই কাল ধ্বংস করেছে। হিং¯্র বাঘ লোকালয়ে ঢুকলে তাকে কি আদর দিবে? ওদের দেহ অভ্যন্তরের পশু শয়তানটি মতিভ্রষ্টদের দেহের সবশাখার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ঐ কুরিপু প্রবৃত্তি তাকে যে ভাবে নাচাচ্ছে ব্রেকফেল গাড়ীর ন্যায় দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে । আর পুতুলের মত নাচাচ্ছে। নিত্যদিন ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যা ঘটনা দীর্ঘ হচ্ছে লাইন। সেখান থেকে কয়েকটি ঘটনা আমার শ্রদ্ধেয় পাঠকের শরনার্থে উল্লেখ করছি। ‘‘ কাগজ কলম মন’’ লেখে তিনজন আড়াই তিন বছরের মাছুম শিশু পায়ে পায়ে হাটতে শেখে এবং আলতোভাবে কথা বলে। সেই অবুঝ শিশুদের রক্তাক্ত ধর্ষণ ঘটনায় চিত্ত মোচড় দিয়ে ওঠে। কত লিখবো। এগুয়না মন। কলমও লিখতে চাই না। ধর্ষন, খুন বৃদ্ধি পেল কেন? থামানো যাচ্ছে না তার কি কারণ। কারো কারো মতে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচারে দীর্ঘ সূত্রতা। ধরা মাত্রই দন্ড কার্যকর করলেই এই অনৈতিক বিবেক বর্জিত কর্মকান্ড বন্ধ হতে বাধ্য।
হানাদার মুক্ত স্বাধীন দেশে জননীকূল তাদের শ্রেষ্ট সম্পদ ইজ্জত। আর সম্ভবনাময় জীবন হারাচ্ছে কিন্তু কেন ? দেশ মুক্ত হলো মায়ের জাতের মুক্তি আসেনি ঘটনা প্রবাহ তার প্রমাণ। প্রতিবাদী কণ্ঠি নুসরাত অন্যায়ের সাথে করেনি আপোষ। মামলা করে দেয় লেবাসী ভন্ড অবৈধ উপার্জনকারী লম্পট মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজের নামে। ওসি মোয়াজ্জেম এবং সরকার দলীয় পাতি নেতারা অনেক উমকি-ধামকি চাপ দিয়েও দমাতে পারেনি নুসরাতকে। সিরাজ সতীর্থরা প্লান করে পুড়িয়ে আকাম-কুকাম ঢাকতে চেয়েছিল। ৮০ ভাগ কয়লা হওয়া শরীর নিশ্চিত মৃত্যুর চৌকাঠে গিয়ে বার বার কাতর স্বরে সিরাজের ফাঁসি চেয়েছে নুসরাত। সে এই এবং আগামী প্রজন্মের প্রেরণা। দেশ ব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সম্প্রতি ঘটনা অল্প-স্বল্প তুলে ধরলাম। যশোর তৃষার ধর্ষনের পর হত্যার ঘটনা আজও কাঁদায়। বাগেরহাট চিতলমারীতে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সঞ্চিতা মন্ডলকে ধর্ষনে ব্যর্থ হয়ে ধর্ষক তাকে হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে। অধ্যক্ষ সহ চার জন গ্রেফতার হয়েছে। যশোর শার্শায় পঞ্চম শ্রেণির এক মাদ্রাসার ছাত্রীকে শ্লীলতা হানির ঘটনা ঘটছে। যশোর খড়কিতে চার শিশু ধর্ষন ও ২ শিশুকে ধর্ষনের চেষ্টার অপরাধে গ্রেফতার হয়েছে এক জন। তিন জেলায় মাদ্রাসার ছাত্রী সহ চার জন ধর্ষিত হয়েছে। যশোর কেশবপুরে ইউওএনওর বিচার না পেয়ে অঝোরে কাঁদলো দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। অবশেষে আদালতে মামলা হয়েছে। এক গৃহবধূকে ধর্ষনের অভিযোগে মাহামুদ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদাহ কালিগঞ্জে। ঢাকা পল্লবীতে পোশাক শ্রমিককে ধর্ষনের পর হত্যা করে দুই টুকরা করেছে। ঘটনাটি ১লা মে ১৯। যশোর চৌগাছা মাঃ বিঃ শিক্ষক ইসমাইল ছাত্রীকে শ্লীলতা হানি ঘটিয়েছে। মণিরামপুরে এগারো বছরের কিশোরীকে দুই মাস আটকিয়ে ধর্ষন করেছে। পুরোনো শকুন ইদ্রিস (৫৫)। নড়াইল লোহাগড়া এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষনের ভিডিও ধারন করেছে ধর্ষক। ধর্ষক এখন জেল হাজতে। বাগেরহাট পাতিলা খালিতে প্রথম শ্রেণির মাদ্রাসার ছাত্রী ইয়াসমিনকে ধর্ষনের পর হত্যা করে লাস পুতে রাখে। ঘাতক ধরা মাদারীপুর শিবচরে এক স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষনের পর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষক একন জেল হাজতে। ঝিনাইদাহে তিন ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে। শিক্ষক হাফিজুরের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতা হানির অভিযোগে শিক্ষক এখন পলাতক। ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরা শ্যাম নগরে। দুই শিশু ধর্ষনের ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটে। এগারো বছরের কন্যাকে সৎ পিতা আলমগীর শেখ দশ দিন আটকিয়ে রেখে ধর্ষন করে। ঘটনাটি ঘটেছে মংলাতে। গ্রাম্য চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম ঘুমের ইনজেকশন পুশ করে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে রক্তাক্ত করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মহেসপুরে। শ্বশুর কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছে গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদাহ পৌরসভায়। নড়াইল সদর উপজেলা গোপালপুর গ্রামে সাত বছরের শিশু ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। এমনি ভাবে পুরোহিত, ইমাম, শিক্ষক, শ্বশুর, খালু, সৎ পিতা, পালিত পিতা সহ ঘরে বাইরে ধর্ষন ও হত্যার ঘটনা ঘটছে সারা দেশে।
অমানুষদের পাতা ফাঁদ জাল থেকে পালালেও পুকুর থেকে অর্থাৎ দেশ থেকে কোথায় পালাবে ? পিঠ ঠেকে গেছে প্রজন্মে। নুসরাত অনুকরনীয় অনন্তকাল স্মরণ করবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। নুসরাত প্রতি মৃত্যু বার্ষিকীতে স্মৃতি চারণ করে বক্তৃতা দেবে তুমি স্বর্গে শান্তিতে থাকো। তোমার দৃঢ় মনোবল ও সাহসের জন্য তোমাকে দিলাম স্যালুট। তোমার স্বজনদের চোখের জলে ভিজে যাচ্ছে আজও, তোমার সমাধি মাটি। ভালো থেকো নুসরাত। তোমার ঘাতকের দন্ড কার্যকর বিচার হয়েছে। এ প্রত্যাশা করি। নুসরাত আবারও স্যালুট।