আল আমিন খান।
অগ্রহায়ণকে বিদায় দিয়ে আগমন ঘটছে শীতের। কিন্তু গ্রামে-মহল্লায় এরইমধ্যে ই প্রচুর কুয়াশা ও ঠাণ্ডা পরতে শুরু করেছে। পাশাপাশি কুয়াশা মোড়ানো দাপটও দেখা যাচ্ছে। ঠাণ্ডা তাড়াতে ঘরে ঘরে নামতে শুরু করেছে ভারী পোশাক ও লেপ-তোষক। রীতিমতো লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে বেড়ে গেছে কারিগরদের ব্যস্ততা। এই ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে নগরীর ফুলতলার লেপ-তোষক তৈরির দোকানগুলোতেও। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লেপ-তোষকের দোকানগুলো সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কারিগররা তুলোর স্তুপ করে তার ওপর ধনুক বা মোটা লাঠি দিয়ে আঘাত করে চলেছেন প্রতিনিয়ত।এতে তুলোধুনো হচ্ছে স্তুপটা। পুরোপুরি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সেই তুলো ভরা হবে রং বেরংয়ের কাপড়ের তৈরি করা লেপ-তোষকের কভারে। পরে শুরু হয় সুই-সুতার কাজ। কভার ও ভেতরে ঢোকানো তুলা ভেদ করে খস খস শব্দ তুলে চলতে থাকে সূঁচ। সুই-সুতোর গাঁথুনিতে বাধা পড়ে যায় সেই কভার-তুলো। আর এতেই তৈরি হয়ে যায় একেকটি আকর্ষণীয় লেপ-তোষক ও শীতের পোষাক। একাধিক দোকানদের সাথে কথা বলে জানা যায়,প্রতিবছর শীতের শুরুতেই ক্রেতারা লেপ-তোষকের দোকানগুলোয় আসতে থাকেন। ঠাণ্ডার মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটছে না। সারা বছর তেমন একটা ব্যবসার লাভ হয় না। পুরো বছরের ব্যবসা শীতের এই তিন থেকে চার মাসে করতে হয়। তবে, এজন্য তাদের ব্যাপক শ্রম দিতে হয়। দিন ছোট হওয়ায় কাজ করতে করতে রাত হয়ে যায়। এমন কী খাওয়াও সময় থাকে না। বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ায় ব্যবসায় লাভ কমে গেছে বলেও জানান ওই দোকানিরা।
তারা জানান, আগের তুলনায় ব্যবসায় প্রতিযোগিতা অনেক বেড়েছে। তাই সামান্য লাভেই ক্রেতাসাধারণের কাজ করে দিতে হচ্ছে। লেপ-তোষক বানাতে গার্মেন্টেসের ঝুট ও কার্পাস তুলো ব্যবহার করতে হয়। একটি সিঙ্গেল লেপ বানাতে ৬০০-৮০০ টাকা, সেমি-ডাবল লেপ ৭০০-১০০০ টাকা এবং ডাবল লেপ তৈরিতে ৮০০-২০০০ টাকা বিক্রি হয়। এরমধ্যে রয়েছে সুতো, কাপড় ও মজুরি ব্যয়। তবে, তোষক বানানোর ক্ষেত্রে দাম বেশি পড়ে। তুলার মান, পরিমাণ, নারিকেলের ছোবলা ও কাপড়ের ওপর নির্ভর করে একেকটি তোষক তৈরির কাজে ব্যয় হয়।