নওয়াপাড়া দাহ্য পদার্থ কয়লার দূর্গন্ধে শহরবাসী অতিষ্ঠ

183
ক্রাইম রিপোর্টার,(উৎপল ঘোষ,যশোর)ঃ
যশোর নওয়াপাড়া শিল্প ও বানিজ্য বন্দরে আমদানিকারকরা বিভিন্ন দেশ থেকে দাহ্য পদার্থ  কয়লা নদী পথে আমদানি করেন। ঐ দাহ্য পদার্থ ভৈরব নদ সংলগ্ন বিশেষ করে রেল ও সড়ক পথ ঘেঁষে ও ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় কয়লা পাহাড় সমান স্তূপ করে রেখেছে।  কয়লার স্তূপ থেকে প্রায় সময় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। স্তূপের আশপাশের গাছ-পালা মরে গেছে। এমনকি বসতবাড়ির আঙিনায় যে ফলজ বৃক্ষগুলো রয়েছে তা ও মরতে বসেছে। উদ্ভট গন্ধে আশপাশের বসতবাড়ির লোকজন অতিষ্ঠ, বিশেষ করে শিশু ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। ফসল ও গাছপালা, কয়লার নিঃসৃত গ্যাসে আক্রান্ত। কয়লা থেকে নির্গত পানি ভৈরব নদে পড়ে পানি দূষণ হচ্ছে। নদী,রেল ও সড়কের সরকারী লোকদের তুষ্ট করে কারবার চালিয়ে যাচ্ছে যা দেখার কেউ নেই।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,কয়লা ব্যবসায়ীরা নিয়ম – নীতি লঙ্ঘন করে সড়ক ঘেঁষে ও জনবসতিপূর্ণএলাকায় সারি সারি কয়লার স্তূপ করে রেখেছে। বেশির ভাগ স্তূপগুলো  নওয়াপাড়া পীরবাড়ি সংলগ্ন ব্রাইট ঘাট,শ্মাসান ঘাট সংলগ্ন,কর কার্যালয়,হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির সংলগ্ন,পাঁচ কবর এলাকায় যেখানে একটি কলাতলা নামেপ্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশ পাশে এমনভাবে কয়লা পাহাড় সমান স্তুুপ করে রাখা হয়েছে একদিকে যেমন কয়লার ধোঁয়া,দুর্গন্ধে ভরা,অন্যদিকে ধোঁয়া বাতাসের সঙ্গে মিশে অত্র এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষণ করছে।এ দাবি এলাকার গণ মানুষের।তারা আরো অভিযোগ করে বলেছেন,কয়লার বিষাক্ত ধোঁয়ার দূর্গন্ধের কারণে আমরাই চলতেপারি না। আর কোমলমতি শিশুরা স্কুলে যেতে চায় না।প্রায় প্রতিটি পরিবারের কোনো না কোনো শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে।জন্মের কিছুদিন পর থেকে জ্বর,কাশি,শ্বাসকষ্ঠের সমস্যা একটা না লেগেই আছে।কয়লার স্তুপগুলো রাখা হয়েছে বন্দর নগরীর নওয়াপাড়ার ভৈরব নদের দক্ষিণপাড়ের পৌরসভার মহাকাল থেকে রাজঘাট ল  জমিদার বাড়ি এলাকা পযর্ন্ত।একদিকে যেমন দক্ষিণ পাড়ের মানুষ ভূগছেন।অপরদিকে দক্ষিণের বাতাস যখনই  উত্তরের দিকে প্রবাহিত হয়,তখন নদের উত্তর পাড়ের মানুষের একই স্বাদ গ্রহণ করতে হয়।অর্থ্যাৎ দূই পাড়ের মানুষ এক দুর্বিসহ জীবন -যাপন অতিক্রম করছে।
মাহাবুব ব্রাদার্স, সরকার গ্রুপ, শেখ এন্টারপ্রাইজ, জয়েন্ট এন্টারপ্রাইজ,উত্তরা ট্রেডার্স, এম আই ট্রেডার্স,মোশারফ ব্রাদার্স, সাহারা এণ্টার প্রাইজ, একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানের কয়লার স্তূপগুলো চেঙ্গুটিয়া, ভাঙাগেট, মশরহাটি এলাকা থেকে শুরু করে তালতলা রাজঘাট জমিদার বাড়িএলাকা পর্যন্ত অসংখ্য কয়লার স্তূপ করে রাখা হয়েছে জনবসতিপূর্ণ এলাকায়। কয়লার স্তূপের গন্ধে ও তাপের কারণে অন্য জায়গায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। সড়ক ও বসত বাড়ি থেকে কয়লার স্তূপের দূরত্ব প্রায় ১০থেকে২৫০ ফুট। ড্যাম্পের উপর দিয়ে গেছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন জাতীয় গ্রীডের লাইন। এই লাইনে কিছু দিন আগে এসকেভেটর দিয়ে কয়লা লোড করার সময় বিদ্যুৎ এর তারের স্পর্শে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। শুধু তাই নয়, এখানে প্রায় সময় অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তাই এ সকল স্থানে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে ব্যাপক জানমালের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।কয়লার কাজে যে সমস্ত শ্রমিক লোড আনলোডে কর্মরত রয়েছে প্রথমত এলাকায় কাজ না থাকায় অনেকে শখ করে যায়,দশ থেকে পনেরো দিন।কিছুদিন অতিবাহিত হলে আর যায় না। কারণ কয়লার গন্ধে পেটের পীড়া সহ নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। কয়লার নিঃসৃত ধোঁয়ায় কফ, থুতু কালো হয়। এমন কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে আলাপকালে বাঘুটিয়া গ্রামের বাবু, বিভিন্ন এলাকার অনেক শ্রমিকরা বলেন,শরীরে সমস্যা হচ্ছে প্রচুর।দশ জন শ্রমিক বলেন,আমাদের শ্বাসকষ্ঠ ও হাপাঁনি রোগ ছিল বটে।কিন্তুু দাহ্য পদার্থ কয়লার বিষাক্ত নিঃসৃত ধোঁয়ার কারণে রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।যার কারণে আমরা আর যাই না।যে টাকা কয়লার  ঘাটে আয় করেছি তার অর্ধেকরও বেশি টাকা রোগের পিছনে চলে গেছে।বিশেষজ্ঞ ডাক্তার  বলেছেন,আপনি কি কাজ করেন?উত্তরে দরিদ্র লোকটি আক্ষেপ করে বললেন,আমি কয়লার ঘাটে আনলোডের কাজ করি। শরীরের এর আগে তেমন কোনো সমস্যা ছিল না।কয়লার নিঃসৃত ধোঁয়ার গ্যাসে শরীরে এই সমস্যা হয়েছে।আপনি এ কাজ ছেড়ে দিয়ে  অন্য কাজ করেন।তাতে জীবন বাঁচবে।