উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ: অষ্টগ্রাম উপজেলা

200
আরিফুর রহমান সেতু , সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলের অন্যতম একটি উপজেলা হল অষ্টগ্রাম।   রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ কিশোরগঞ্জের এই এলাকা থেকেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ৭ বার।  এখন এই এলাকায় সাংসদ হিসেবে আছেন তারই সন্তান রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক এম পি। হাওরাঞ্চলের উন্নয়নের অবস্থা দেখতে cintv24  এর প্রতিনিধিদল সরেজমিনে উন্নয়ন প্রেক্ষাপট দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে এবারের উদ্দেশ্য অষ্টগ্রাম।
সড়ক পথে জেলা শহর থেকে বেশ দুরে অবস্থিত এই উপজেলা । ৮ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলা আগে ছিল অনেকগুলো দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটা এলাকা যার এক গ্রাম থেকে আর এক গ্রামে পৌছতে লাগত ৮ থেকে ১০ ঘন্টা।  আজ সেখানে গিয়ে দেখা যায় নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন রাস্তা,  বেড়ীবাধ, অসহায়দের জন্য ঘর, বয়স্ক, বিধবা প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতা,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসালয় সহ লেনদেনের জন্য ব্যাংক,  এ যেন হাওরের মাঝে এক টুকরা শহর।  হাওরের ফসল এবং শুষ্ক মৌসুমে যাতায়াতের জন্য সাবমারসিবল রোড সহ আরো অনেক   কিছু।  এ কাজের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব মোর্শেদ cintv24   কে বলেন, এই সরকারের আমলে উন্নয়ন এর কাজ অনেক বেড়েছে, বেড়েছে বরাদ্দ এবং কাজের মান। এই অর্থবছরে     অষ্টগ্রামে ৯৩ টি পাকা সাবমারসিবল রাস্তা হতে যাচ্ছে যার দৈর্ঘ্য  প্রায় ২০০ কি মি। তাছাড়া এখন কাজের মান যেভাবে যাচাই করা হয় আশা করি ২০৩০ সালের আগেই সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টগোল  বাস্তবায়ন হবে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাঝে বিভিন্ন এলাকার উন্নয়নের কথা ও সমস্যার কথা জানা যায়। তবে জনপ্রতিনিধি হিসেবে উপজেলায় সুনাম অর্জনকারী চেয়ারম্যান হলেন বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো এনামুল হক।  ইউনিয়নের উন্নয়ন কাজ, সকল নাগরিক সেবা দোরগোড়ায় পৌছে দেয়া সহ ডিজিটাল সেবা প্রদানে তিনি অন্যতম।  তাই উপজেলার অন্য চেয়ারম্যানরা তাকে ডিজিটাল চেয়ারম্যান নামে অভিহিত করেন।  তাছাড়াও পিছিয়ে নেই বাকিরাও। নিজেদের সুনামকে এলাকায় ধরে রাখতে তারাও চালিয়ে যাচ্ছেন চলমান কাজ। তাদের মধ্যে রয়েছেন অষ্টগ্রাম সদর ইউ পি চেয়ারম্যান সৈয়দ ফারুক, পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউ পি চেয়ারম্যান কাছেদ মিয়া,  কলমা ইউ পি চেয়ারম্যান রাধাকৃষ্ ন দাস, দেওঘর ইউ পি চেয়ারম্যান ইবরাহিম মিয়া, খয়েরপুর – আব্দুল্লাহপুর ইউ পি চেয়ারম্যান মুক্তার খান এবং কাস্তুল ইউ পি চেয়ারম্যান সাইফুল হক সহ সকলের সাথেই cintv24 এর প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাত করে।
হাওরের একাল সেকালের বিবরনী জানতে স্থানীয় সিনিয়র প্রবীন সাংবাদিক এবং সাবেক প্রধান শিক্ষক মুরু ঠাকুরের সাথে আলাপনে জানা যায় হাওরের উন্নয়ন ও ক্ষতি। তিনি আমাদের জানান, আগে কৃ্ষকরা অনেক ভাল ছিল।  এখন এই উন্নয়ন হচ্ছে ভাল কিন্তু এই উন্নয়নে যদি হাওর মারা যায়, কৃষক না বাচে তাহলে এটা কার জন্য উন্নয়ন।  হ্যা উন্নয়ন হবে তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী।  আজকে যেখানে সেখানে বাধ দিয়ে নদীর পানি আটকানো হচ্ছে, যার ফলে শুকিয়ে গেছে হাওরের   মাঝের খালগুলো। এ বছরের প্রায় ৪০ ভাগ হাওরের জমিতে কৃষক ফসল ফলাতে পারছে না শুধু অপরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য।  তাই সরকারের কাছে আবেদন উন্নয়ন করুন ভাল কথা, কিন্তু জনগন যদি না বাচে তাহলে উন্নয়নটা কাদের জন্য করবেন?
তাই তথাকথিত অপরিকল্পিত উন্নয়ন না করে পরিকল্পিত উন্নয়ন করুন যাতে হাওর বাচে, কৃষক বাচে  এবং উন্নয়ন হয়।