শনিরদশা কেটে উঠে উন্নয়নের ছোঁয়া পড়েছে খুমেক হাসপাতালে

157

আবু হামজা বাঁধন, সিআইএনটিভি২৪ ডেক্স।
অসাধনকে সাধন করা হয়েছে । দীর্ঘ ৩০ বছরের রামরাজত্ব ভেঙ্গে দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল কে একটি সম্মানজনক অবস্থা ফিরেয়ে এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ। বর্তমান খুমেক হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শেখ সালাহ্উদ্দিন জুয়েল এমপি’র সহায়তায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ১৫শ বেডের প্রস্তাবনা পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে। ইতিমধ্যে ৮ কোটি টাকা মূল্যের একটি এমআরআই মেশিন আনা হয়েছে। নতুন করে ৫ বেডের একটি ডায়াবেটিক্স ইউনিট চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে আইসিইউ , সিসিইউ ইউনিটে বেড বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। খুমেক হাসপাতালের ৬তলায় এক সময়ের মাদক সেবনের আখঁড়া এখন বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট ও শিশু সার্জারি ইউনিট চালু করে সমস্ত আগুনে পোড়া রোগির চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এটা দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি বড় প্রাপ্তি বলে সচেতন মহল মনে করেন। এছাড়া হাসপাতালের পুরাতন ভবনগুলো মেরামতসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলছে।
জানাযায়, ১৯৮৯ সালের ১৮ জানুয়ারী ৪০.২৫ একর জমির উপর নির্মিত হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রথম দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে যাত্রা নাম মাত্র শুরু হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালটিকে ৫০০শ বেডে উন্নীত করা হয়। চলতে থাকে চরম জনবল সংকট। অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে সীমাহিন দূর্নীতি । অনেকটা থেমে যায় চিকিৎসা সেবা সহ সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড। তখন বিভিন্ন সিন্ডিকেট হাসপাতালে প্রভাব বিস্তার করে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে কোটিপতি বনে যায়। এই অবস্থায় সাধারন রোগিরাও অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়ে দালালের কাছে। প্রায় ২৮ জন তত্ত্বাবধায়কের রদবদল হলেও হাসপাতালের সার্বিক চিত্রের পরিবর্তন দেখা যায়নি। মুখ থুবড়ে পরে খুলনার এ বৃহৎ হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম।
তথ্যমতে, ডাঃ এটিএম মঞ্জর মোর্শেদ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজের জীবনের ঝুঁকি মনে করেও কখনও পিঁছপা হননি বরং অপরসীম মনোভাব নিয়ে চলতে থাকা বিভিন্ন দূর্নীতি ও অনিয়ম কঠোরভাবে প্রতিরোধ করেন। হাসপাতালটিকে একটি মডেল হাসপাতাল হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা অব্যহত রাখেন। তাঁর সকল ভূমিকা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় । তবে তার নিবেদিত মনোভাব আরও বাড়বে । যদি সবাই তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর কর্মকান্ডে বাঁধা সৃষ্টি করে যাচ্ছে। কারণ তারা এখন আর হাসপাতালটিকে লুটেপুটে খেতে পারেছে না বলে মনে করেন স্থানীয়রা। হাসপাতালের সুষ্ঠ পরিবেশধারা বজায় রাখার স্বার্থে পরিচালক ডাঃ মঞ্জুর মোর্শেদ আপ্রাণ চেস্টা অব্যহত রেখেছেন। তার কর্মচাঞ্চল্যকে সাধুবাদ জানিয়েছেন আগত সেবা প্রত্যাশীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, খুলনা বিভাগীয় শহরের প্রাণ কেন্দ্রে একমাত্র পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল । ১০ জেলায় ৪ কোটির বেশি লোকের বসবাস। বিভাগের প্রত্যান্ত অঞ্চলের ও সকল জেলা হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জটিল রোগিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তাছাড়া প্রচান্ড রোগির ভীর থাকে । বর্হিঃ বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা রোগির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ৫শ বেডের এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১২শ থেকে ১৪শ রোগি ভর্তি থাকে । ফলে বেশিরভাগ রোগিদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। অনুমোদিত বেডের তুলনায় অতিরিক্ত রোগি ভর্তি থাকায় হাসপাতাল থেকে পর্যাপ্ত ঔষধ সহ অন্যান সুবিধা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।