আলফাডাঙ্গায় তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও ভিজিডির চাল পাচ্ছে না ১৩ দুঃস্থ নারী

43
রনি মজুমদার, ষ্টাফ রিপোর্টার
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায়  তালিকাভুক্তি হওয়ার ১৭ মাস পেরিয়ে গেলেও ভিজিডি কার্ড ও চাল পাননি অন্তত ১৩ দুঃস্থ নারী। উপজেলার ৫ নং বানা ইউনিয়নের ১৩ জন দুঃস্থ নারী এই চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তবে প্রতি মাসেই নিয়মিত উঠানো হচ্ছে তাদের নামে বরাদ্দকৃত ৩০ কেজি চাল।  কে বা কারা চাল তুলে নিচ্ছে তা বলতে পারছেন না ওই দুঃস্থ নারীরা। তবে তাদের ধারনা বানা ইউপি চেয়ারম্যানের হাদী হুমায়ুন কবীর বাবুর  যোগসাজশেই এ চাল অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে নাম না প্রকাশ করা শর্তে
কয়েকজন ইউ পি সদস্য এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তারা আরও জানান,  ৩৬৬ টি কার্ডের মধ্যে তালিকায় নাম থাকা অন্তত ১৩ জন দুঃস্থ নারীকে কার্ড দেওয়া হয়নি। তাদের নামের কার্ড দিয়ে অন্য কেউ চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছেন। প্রকৃত দুঃস্থরা ভিজিডি কার্ডের সুবিধা না পাওয়ায় বর্তমান সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তারা এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
৭ নং ইউপি সদস্য কাজী বাকা বলেন, আমার ওয়ার্ডে কয়েকজন আছে যাদের তালিকায় নাম আছে কিন্তু চাল পায় না। চেয়ারম্যানের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেছেন- এটা আমার বিষয় তোমাদের এ নিয়ে ভাবতে হবে না। এটা আমি দেখবো।
তবে ভিজিডির চাল উত্তোলনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান হাদী হুমায়ুন কবির বাবু।
তিনি বলেন, “আমরা এক বছর আগে সবাইকেই কার্ড দিয়ে দিছি। সবাই ঠিকমতই চাল নেচ্ছে। এখন কাগে চাল কারা নেছে তাতো আমি বলতে পারিনে।  পুরো ইউনিয়নের ব্যাপার। সবার মুখতো চিনে রাখতে পারিনে।”
ভিজিডি তালিকাভূক্ত হওয়ার পর কার্ড না পাওয়া ১৩ জন হলেন, ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের কোমেলা বেগম, ৩ নং ওয়ার্ডের মোসা. রেনুকা বেগম, ৪ নং ওয়ার্ডের জাহানারা বেগম, জোসনা বেগম, ৫ নং ওয়ার্ডের সাবিনা বেগম, ৬ নং ওয়ার্ডের পারুল বেগম, ৭ নং ওয়ার্ডের মোসা. খুশি  বেগম, রমেনা বেগম, নূর জাহান বেগম, সাথী খানম, ৯ নং ওয়ার্ডের মোসা. রতনা, মোসা. তানিশা বেগম, মোসা. আদরী বেগম। তাদের অভিযোগ, তালিকায় তাদের নাম থাকলেও এখন পর্যন্ত তারা কার্ড ও চাল পাননি।
এছাড়াও ২ নং ওয়ার্ডে ভিজিডি তালিকায় মোসা. আন্না বেগম নামে এক মহিলার নাম রয়েছে। প্রতি মাসে চালও নেওয়া হচ্ছে তার নামে। কিন্তু এ নামে ওই ওয়ার্ডে কোন মহিলা নেই তাহলে এই নামে চাল নিয়েছে কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, শুনেছি ওই চাল নাকি মিরাজ চৌকিদার তুলে নেয়।
জানতে চাইলে মিরাজ চৌকিদারের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যানের লোক জাহাঙ্গীর আমার কাছ থেকে ২৫০০ টাকা নিয়ে এই কার্ড করে দেয়। তারপর থেকে আমি ওই নামে চাল নিয়েছি।
এ সব বিষয়ে আলফাডাঙ্গা  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিপোর্ট জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছি।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, আমরা রিপোর্ট পেয়েছি আইনানুগ যে ব্যবস্থা নেওয়ার তা আমরা নিবো।