করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ সুপার এস এম সফিউল্লাহ

55

মোঃ আল আমিন খান ব্যুরো চিফ খুলনা

নোভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সংক্রমন থেকে সাধারন জনগনকে বাচাতে সচেতনতা থেকে শুরু করে নিরলস প্ররিশ্রম করে যাচ্ছে খুলনা জেলার পুলিশ সুপার এস এম সফিউল্লাহ। করোনা সংক্রমনের শুরু থেকেই মাঠে ময়দানে কাজ করে যাচ্ছেন সকলে। স্বাভাবিক কাজের পাশাপাশি তাই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে সকল পুলিশ সদস্য। জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। নিজেদের সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে লকডাউন বাস্তবায়ন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রচার অভিযান, নির্ধারিত সময়ে হাটবাজার, দোকানপাট বন্ধ করা, বিদেশ ফেরত ব্যক্তির বাড়ি খুঁজে বের করা, সংক্রমিত ব্যক্তির হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করাসহ কর্মহীন ব্যক্তির বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। আর নিজেদের সুরক্ষাসহ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ১০ শয্যার বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার দাবি পুলিশ সদস্যদের। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, খুলনা জেলা পুলিশের ৯টি থানাসহ সুপারের কার্যালয়ে মোট ১৯৯৩ জন সদস্য কর্মরত রয়েছেন। গত ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা রেখে চলেছেন। এ ছাড়া প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ সদস্যকে পর্যায়ক্রমে করোনা সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে খুলনায় কোনো পুলিশ সদস্যের মৃত্যু না হলেও সংক্রমিত হয়েছেন ২২ জন। মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সুরক্ষার জন্য এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ পিপিই (পার্সনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট) পাওয়া গেছে তা পর্যাপ্ত। ইতোমধ্যে সেগুলো দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের মাঝে একবার করে বণ্টন করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সব সদস্যের মাঝে পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। পুলিশের একাধিক সদস্য বলেন, পুলিশ নিয়মিত মানুষের কাছে যাচ্ছে। বিপদে-আপদে মানুষও পুলিশের কাছে আসছে। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকালে জনসমাগম ঠেকাতে ঘটনাস্থলে পুলিশকেই যেতে হচ্ছে। অনেক সময় মানুষ বুঝে-না বুঝে আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হচ্ছে। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ করোনা প্রতিরোধে নিজেদের সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। একবার পাওয়া সুরক্ষা সামগ্রী দিয়ে দিনের পরে দিন চলা যায় না। ফলে আমাদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও কম নয়। এর মধ্যেই সব দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে খুলনা জেলা পুলিশ শুরু থেকেই সতর্ক অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সরকারি সব ধরনের নির্দেশনা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তৃণমূল পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পুলিশ সদস্যরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাদের নিজেদের সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য বিভাগ যথেষ্ট সচেতন রয়েছে। আমরা এখন ভাবছি পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা নিয়ে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি), খুলনা জেলা পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ), পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি), রেলওয়ে পুলিশ, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশে প্রায় ১০ হাজার সদস্য কর্মরত রয়েছে। আমরা চাই খুলনা বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালকে ১০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হোক। খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এসএম সফিউল্লাহ (বিপিএম) বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনামতো মাঠপর্যায়ে আজ পর্যন্ত বার হাজার মানুষের কাছে খাবার পৌচ্ছায়ে দিছি, যতদিন এই মহামারি করোনা ভাইরাস থাকবে ততদিন খাবার মানুষের বাড়িবাড়ি যাবে।করোনাঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচারণা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, লকডাউন বাস্তবায়ন, বিদেশ ফেরতদের খুঁজে বের করা, হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা, খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়াসহ যাবতীয় কাজ পুলিশ সদস্যরা নিষ্ঠার সঙ্গে করে যাচ্ছে। সদস্যদের নিজেদের করোনাঝুঁকি মাথায় রেখে পুলিশ হেডকোয়ার্টার ও জেলা পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।