আবু হামজা বাঁধন, ডেক্স রিপোর্ট।
মশিয়ালী গ্রামের ট্রিপল মার্ডারের সাথে সংশ্লিষ্ট একজনও অপরাধি ছাড় পাবে না। অচীরেই আইনের আওতায় আনা হবে । বৃহস্পতিবার মশিয়ালী গ্রামের হত্যার স্পট পরিদর্শনে গিয়ে কেএমপি পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির পিপিএম জনগনের উদ্যেশে এ কথা বলেন।
গত ১৬ জুলাই খুলনার খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামে ঘটে যায় বর্বরচিত ও নেক্কারজনক হত্যাকান্ড। কালের সকল ঘটনাকে হার মানায়। সারা বাংলাদেশ থমকে গিয়েছিল। ওই তারিখ রাত সাড়ে আটটার দিকে মশিয়ালী গ্রামের কুখ্যাত সন্ত্রাস জাফরিন হাসান, জাকারিয়া ও মিল্টন বাহিনীর নারকীয় তান্ডব চালায়। গ্রামবাসি সূত্রে, তাদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে পর পর নিভে যায় তাজা ৩টি প্রাণ। এ ঘটনায় মামলার অন্যতম আসামী জাফরিন হাসান সহ মোট ৪ জন গ্রেফতার হয়। তবুও মশিয়ালী গ্রামের আপামর জনতার প্রতিবাদের ভাষা স্তব্দ হয়নি। গ্রামবাসির একটাই প্রাণের দাবি অত্যাচরী ওই ৩ ভাইকে যেন অচীরেই ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয়। ফলে প্রতিদিনই মশিয়ালী গ্রামের অলিগলিতে চলতে থাকে মিছিল ও প্রতিবাদের ঝড়। ঠিক এ সময় কেএমপি’র পুলিশ কমিশনারের আগমন ঘটে শোকে স্তব্দ মশিয়ালীতে।
বৃহস্পতিবার (আজ) ২৩ জুলাই সকাল ১১টার দিকে খুলনা মহানগর পুলিশ প্রধান লূৎফুল কবির পিপিএম মশিয়ালী গ্রামে পরিদর্শনে আসলে শত শত গ্রামবাসি তাদের প্রাণের আকুতি নিবেদন করেন পুলিশের এই উদ্ধর্তন কর্মকর্তার কাছে। গ্রামবাসির একটাই দাবি খুনীদের ফাঁসি চাই।
এদিকে পুলিশ কমিশনার গ্রামবাসির উদ্যেশে তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যতে বলেন,“ এই হত্যাযজ্ঞ আমাকে সাংঘাতিকভাবে কষ্ট দিয়েছে। ঘটনায় আমি মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছি আমি ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি বলে যাচ্ছি, হত্যাকান্ডের সাথে যেই জড়িত থাক, এখানে আমাদের কোন অন্যায় অবহেলা কিংবা যাদের অপরাধির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে এই অপরাধ সংগঠিত হয়েছে তাদেরকে অবশ্যই আমরা সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবো। তিনি আরো বলেন, আমি এখানে থাকতে ঘটনার সাথে জড়িত একজন অপরাধিও ছাড় পাবেনা এটা আপনাদের কাছে আমার অঙ্গিকার “
পরবর্তীতে পুলিশ কমিশনার স্বজন হারাদের কথা শোনেন এবং এর আগে তিনি ঘটনার স্পট গুলো পর্যাবেক্ষণ করেন। পাশাপাশি তদন্তকারী কর্মকর্তাদের তদন্তের বিষয় বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় ঘটনার অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশিনার(ক্রাইম) এস এম ফজলুর রহমান, কমিটির সদস্য অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশিকিউশন) মো. আনোয়ার হোসেন, উপ-পুলিশ কমিশনার সোনালী সেন, অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শিপ্রা রাণী দাস, দৌলতপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার বায়জিত ইবনে আকবর ও খানজাহান আলী থানার ওসি তদন্ত মোঃ কবির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সাজ্জাদুর রহমান লিংকন, ৩৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা সরদার আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কিসমত আলী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য এস এম বখতিয়ার পারভেজ সহ শত শত গ্রামবাসি উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, নিহত সাইফুলের পিতা সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে জাকারিয়া-জাফরিন ও মিল্টন সহ ২২ জন ও অজ্ঞাত ১৫/১৬ জনের বিরুদ্ধে খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ১২। এর আগেও খানজাহান আলী থানায় জাফরিন হাসান ও জাকারিয়ার বিরুদ্ধে ডাক্তার বাড়ি এলাকার মোমেন ড্রাইভারে পূত্র সাইফুল হত্যার মামলা রয়েছে।