স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির পদত্যাগ যথেষ্ট নয়, বিচার চাই : ফখরুল ইসলাম আলমগীর

30

পদত্যাগপত্র জমা দেয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিদায়ী মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারিতে সমালোচনার মুখে ডা. আজাদ গত মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিজাইন করেছেন এবং শোনা যাচ্ছে যে, তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে। আসলে তাকে তো বরখাস্ত করা উচিত ছিল। শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকই নন, এর সঙ্গে যারা যারা জড়িত আছেন, ভুল তথ্য দিয়েছেন জনগণকে, তার দায়-দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের ওপরে বর্তায়। আমরা মনে করি, এখানে শুধু মহাপরিচালকের রেজিগনেশন নয়, মহাপরিচালকের বিচার এবং একইসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।

রিজেন্ট হাসপাতালের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৪ সাল থেকেই রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স অবৈধ জানা সত্ত্বেও হাসপাতালটিতে করোনা টেস্ট ও চিকিৎসার জন্য সরকার কিভাবে চুক্তি করল? ওই চুক্তি অনুষ্ঠানে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিবসহ কয়েকজন সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ আরো অনেকে উপস্থিতি ছিলেন বলে আমরা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে দেখতে পেয়েছি।

এই ধরনের চুক্তি সই অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর উপস্থিত থাকার প্রটোকল নেই। রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মোহাম্মদ শাহেদের গ্রেপ্তার নিয়ে নাটক করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ফখরুল আরও বলেন, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা এতো চরমে পৌঁছেছে যে, অধিকাংশ কোভিড হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ নেই বলে জানা গেছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই দুর্নীতি শুরু হয়েছে। সরকারের আর্শিবাদপুষ্টদের কাছে করোনা যেন আর্শিবাদরূপে আবির্ভাব হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রি যেমন পিপিই, মাস্ক, ঔষধ সরবারহ দিয়ে শুরু বলা যায়। এসব অনিয়ম কর্তৃপক্ষের এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ কি আদৌও আছে? করোনাকালেও স্বাস্থ্যসুরক্ষার সামগ্রির কেনাকাটায় দুর্নীতি চরমে। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না। করোনা মহামারীর এই সংকটকালে পুরো জাতি যখন ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন। স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের শামিল। স্বাস্থ্য খাতের জবাবদিহিতাহীন দুর্নীতির দায় সরকারেরই বহন করতে হবে।

করোনার এই প্রাদুর্ভাবের সময়েও বিএনপি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, সীমিত সাধ্য ও ক্ষমতার মধ্য দিয়ে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠনগুলো করোনা মোকাবিলার জন্য মাঠে আছে এবং তারা যথেষ্ট কাজও করেছে। এখন পর্যন্ত বিএনপি ত্রাণ বিতরণ করেছে ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ২৮০ পরিবারের মাঝে। এর সঙ্গে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, ড্যাব করোনার শুরু থেকে জনসচেতনতামূলকসহ চিকিৎসা সেবার কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ-সহযোগীগুলো ত্রাণের কাজ করে যাচ্ছে।

করোনাভাইরাস সম্পর্কিত জাতীয় পর্যবেক্ষণ কমিটির সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ড্যাবের সভাপতি হারুন আল রশিদ, মহাসচিব আবদুস সালাম, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন।