খুলনায় ফারইস্ট’র বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রাণির অভিযোগ

115

খুলনা ব্যুরো
খুলনায় ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কোম্পানীর বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। মেয়াদ পুর্তির পরও প্রতিষ্ঠানটি বীমার টাকা পরিশোধ না করে নানা টালবাহানা করছে। তিন মাসের মধ্যে সমুদয় পাওনা পরিশোধের বিধান থাকলেও বছর পেরিয়ে গেলেও টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহক। ফলে চরম হতাশাগ্রস্ত গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দেয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. কামাল উদ্দিন ২০০৯ সালে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীতে একটি ডিপিএস ও পরের বছর একটি যুগল মেয়াদী বীমা করেন (ডিপিএস নং ০৯০৭০০১৫৭৭)। অনেক কষ্টে তিনি ডিপিএসটির মেয়াদ শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়াম জমা দিয়েছেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যার মেয়াদপূর্তি হয়। কিন্তু টাকা তুলতে যেয়ে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন তিনি।
গ্রাহক কামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, কয়রা শাখা অফিসে টাকা তুলতে গেলে ৩/৪ মাস দেরি হবে বলে জানানো হয়। এ কারণে তিনি নির্বাহী রশিদসহ সকল ডকুমেন্ট অক্টোবর মাসে খুলনা সাার্ভিস সেন্টারে জমা দেন । তাকে বলা হয়েছিল সর্বোচ্চ ৩ মাসের মধ্যে টাকা পেয়ে যাবেন। তবে প্রায় ১ বছর পার হয়ে গেলেও অদ্যবধি টাকা পাননি তিনি। এরই মধ্যে কয়েকবার টাকার জরুরী প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করেও কাজ হয়নি।
এদিকে, দীর্ঘদিন পরে চলতি বছরের জুলাই মাসে ম্যা চুরিটি সেকশন থেকে ‘জমাকৃত ডকুমেন্ট হারিয়ে গেছে’ বলে তাকে জানানো হয়। তখন তিনি যথাযথ নিয়মে নিজ খরচে ডুপ্লিকেট ফাইল তৈরি করে পুনরায় জমা দেন। অফিস থেকে বলা হয় এবার স্পেশালভাবে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে, কবে হাতে পাবেন তার সঞ্চিত টাকা সেটা নির্দিষ্ট করে এখনো বলতে পারছে না কোন কর্মকর্তা। এমনকি আদৌও পাবেন কিনা সেই শঙ্কায় আছেন ভূক্তভোগী গ্রাহক।
ভূক্তভোগী গ্রাহক কামাল উদ্দিন বলেন, কষ্টে সঞ্চিত টাকা যদি বিপদের সময় না পাই তাহলে এই সঞ্চয় করে লাভ কি? ‘বীমার টাকা পেতে জুতার তোলা থাকেনা’ প্রচলিত এই কথার বাস্তব প্রমাণ পেলাম ফারইষ্ট এ বীমা করে।
অপরদিকে, রূপসার ইলাইপুর এলাকার বাবুল ঢালী বলেন, আমি সকল কাগজপত্র দিয়েছি প্রায় ৮/৯ মাস আগে। অফিস থেকে বলেছে সিরিয়াল নম্বর পড়েছে। শুধু তারা আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত টাকা দেওয়ার জন্যন উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
একইভাবে পূর্ব রূপসা বাগমারা এলাকার গ্রাহক আকলিমার স্বামী জাহিদ হোসেন বলেন, বই জমা দিয়েছি করোনা শুরু হওয়ার আগে। আমাকে চলতি মাসের মধ্যে টাকাটা দেয়ার কথা বলেছে। তবে কতদুর কি হয়, না আসা পর্যন্ত ঠিক বলা যাচ্ছে না।
এছাড়া গ্রাহক আঃ হাই (বীমা নং ০৯০৭০০১৫৮০), মনোয়ারা খাতুন (বীমা নং ০৯০৭০০১৫৭৯), ছালমা খাতুন (বীমা নং ০৭০০০১৪৭৭০), আকলিমা বেগম (বীমা নং ০৯০৭০০১৭৪৮) ও জেসমিন আরাসহ অসংখ্য গ্রাহকের পাওনা পরিশোধে ফারইস্ট নানা তালবাহানা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে’র খুলনা ডিভিশনাল ইনচার্জ মোস্তফা জামান হামিদী স্বাধীন বলেন, গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। দ্রুত টাকা পরিশোধ করা হবে। তাদেরকে বলে দিয়েছি, চিন্তা না করার জন্য।