মো. আবু হামজা বাঁধন, ডেক্স রিপোর্ট।
যশোর জেলার অভয়নগর শংকরপাশা গ্রামে বহুল আলোচিত সাগর হত্যা মামলার ২ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো মামলার তদন্ত রিপোর্ট আদালতে পুলিশ জমা দিতে পারেনি। তবে সিআইডিতে মামলা থাকায় একের পর এক তদন্তকারি কর্মকর্তার পরিবর্তন হওয়ার কারণে মামলার তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার।
তৎকালীন মামলার তদন্তকর্মকর্তা এস আই রেফাতুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারী শংকরপাশা গ্রামের বাবলু কুমার রায়ের কনিষ্ঠ পূত্র সাগর রায়কে তার শশুরবাড়ি লোকজনেরা মিষ্টির সাথে বিষমিশিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। বিষক্রিয়া শুরু হলে সাগর রায়কে খুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করলে ওই দিন দুপুর ১টায় মারা যায়। এ ঘটনার ৩ মাস পর বিষয়টি সর্বমহলে জানাজানি হয়ে গেলে সাগরের পিতা বাবলু একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সাগরের স্ত্রী অনামিকা খাঁ, প্রদীপ খাঁ, জয়ন্তী খাঁ , শিমুল খাঁ সহ আরো কয়েকজনকে আসামী দেখানো হয়েছে।
জানাযায়, সাগর হত্যা মামলার সাথে অভিযুক্ত আসামীরা জামিনে এসে সাগরের পিতা বাবলু কুমার রায় ও তার পরিবারকে মামলা উঠানোর জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এমনকি স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে নিহত সাগরের পিতাকে টাকা দিয়ে মামলা উঠানোর প্রস্তাব দেয়। সব চেষ্টা বিফলে গেলে তখন মামলার অন্যতম আসামী জয়ন্তী খাঁ সু-কৌশলে উল্টো সাগরের বড় ভাই সোমকে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। বর্তমান সাগরের পিতা বাবলু সন্তানহারা শোকে পাগলপ্রায় হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে । ধন্যা দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার দুয়ারে। তারপরেও কোন পক্ষ থেকে পায়নি ন্যায় বিচার। ফলে আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে নিহত সাগরের পরিবার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যশোর জেলা সিআইডির পরিদর্শক নজরুল ইসলাম জানান, মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব আমি সদ্য গ্রহণ করেছি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কিছুই স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে অপরাধী যারাই হোক কোন ছাড় পাবে না।
সাগরের পিতা বাবলু রায় বলেন, প্রায় ৩ বছর হয়ে গেল। আর কত অপেক্ষা করলে আমি ছেলের হত্যার বিচার পাবো। আসামীরা উল্টো হুমকি দিচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। আর তাদের অত্যাচারে আমরা হয়তো এলাকা ছেড়ে চলে যাব। তারপরেও আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে যাব।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, মামলার আসামীরা অর্থবৃত্তের মালিক হওয়ার কারণে বিভিন্ন জায়গায় অঢেল টাকা ঢালছে। ফলে প্রভাবশালীরা বরাবরই নিহত সাগরের পরিবারের পক্ষে না থাকে উল্টো প্রদীপ গংদের ঢাল হিসেবে রয়েছে।
বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার অতীত প্রেক্ষাপট বলে দেয়, অপরাধ করে কেউ পার পায়নি। ফলে প্রদীপ গং যতই শক্তিশালি হোক না কেন, আইনের আওতায় আসতে হবে। তাই অচীরেই মামলাটি তদন্ত শেষ করে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত রিপোর্ট পাঠানোর জন্য দাবি জানিয়েছেন শংকরপাশা গ্রামের মানুষ।