ফুলতলায় সৈয়দপুর ট্রাস্টের সম্পত্তি দখলে, রক্ষক যখন ভক্ষক (অনুন্ধানী ০১)

426

স্টাফ রিপোর্টার

খুলনা জেলার কয়েকটি উপজেলাতে সৈয়দপুর ট্রাস্টের ভূসম্পত্তি রয়েছে। তার মধ্যে অনত্যম ফুলতলা উপজেলা। ফুলতলার তাজপুর, নাউদারি, জামিরা মৌজাতে সৈয়দপুর ট্রাস্টের মোটা দাগে বেশকিছু জমি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু কিছু জমি লিজ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তবে নাউদারি মৌজার একটি দাগের বেশ কিছু জমি বেহাত হয়ে রয়েছে দীর্ঘ দিন। শুরু হয় অনুসন্ধানী। একপর্যায় কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসে।

সৈয়দপুর ট্রাস্টের নাউদারী মৌজা, জেল নং ১৫ ও এস এ দাগ নং ৫৬১ তে মোট ৭০ শতক জমি  কয়েকযুগ ধরে অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন একটি মহল। বিষয়টি নিয়ে আরো গভীরে গেলে চাঞ্চল্যকর বেশ কিছু তথ্যাদি বেরিয়ে আসে। এক পর্যায়ে আমাদের হাতে আসে নাউদারির  আর এস  ৬১০ নং দাগের ৮টি খতিয়ান যার এস এ দাগ নং ৫৬১। এই জমির ৭০ শতাংশ হাল জরিপে রেকর্ড করে নিয়েছেন নাউদারির শহীদুল ইসলাম, সুফিয়া বেগম, নাসির উদ্দিন মুন্সী, মহি উদ্দীন, সিরাজ উদ্দিন,  গোলাম রব্বানী, কুলসুম বিবি,  আব্দুল মান্নান খান সহ আরো কিছু কথিত মালিক। তবে প্রশ্ন দেখা দেয় কিভাবে ট্রাস্টি সম্পত্তির মালিক বনে গেলেন তারা।

এ প্রশ্নের অনুসন্ধান করতে গেলে আমাদের সামনে আরো কিছু চমকপ্রদ তথ্য আসে। সৈয়দপুর ট্রাস্টের সম্পত্তি কিভাবে মালিকানা পেল এ বিষয়ে জানতে গেলে কথিত মালিক পক্ষের কেউ কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। তবে সাম্প্রতিক  সৈয়দপুর ট্রাস্টের ওই ৭০ শতাংশ জমির অন্যতম কথিত মালিক  শহিদুল ইসলাম খান  সেনা সদস্যে তমজিদ হোসেনের কাছে ০.০৭৮৫৭৫ একর জমি বিক্রয় করে। একে তো অবৈধ মালিক শহিদুল, তার উপর সৈয়দপুর ট্রাস্টের সম্পত্তি বিক্রয় করেছেন  । সেনা সদস্য তমজিদের নামপত্তনের কাগজে দেখা যায় ফুলতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহাকারী কর্মকর্তা (নায়েব) গাজী সাকিল আহমেদ খতিয়ানের প্রস্তাবনা করেছে। এছাড়া  মিউটিশনের কাগজের অনুমোদন করা যেতে পারে বলে স্বাক্ষর করেছেন ফুলতলা উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মিজানুর রহমান  এবং সর্বশেষ অনুমোদন করেছেন ফুলতলা উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি)  রুলী বিশ্বাস। এছাড়া তমজিদ হোসেন ৬১০ নং দাগের, খতিয়ান নং ৪৭৭ , হোল্ডিং নং ৪৪৫ এর ১৪২৭ সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেছেন । এক কথায় বলা যায় সৈয়দপুর ট্রাস্টের ওই সম্পত্তির নব্য কথিত মালিক তমজিদ জমির খাজনা দিয়েছেন। বিধি মোতাবেক সৈয়দপুর ট্রাস্টের কোন সম্পত্তি বিক্রয় যোগ্য নয়। তারপরেও কোন শক্তির বলে বলীয়ান হয়ে হাল জরিপে রেকর্ড করা হলো! এখানেই শেষ নয়, নায়েব শাকিল আহমেদ যাচাই বাছাই ছাড়া কিভাবে তমজিদ আহমেদ এর জমির নাম পত্তনের জন্য প্রস্তাবনা করেন তা সর্ব মহেলে প্রশ্নের ঝড় শুরু হয়েছে।

এ বিষয় খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করব, যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সচেতন মহল মনে করেন  অবিলম্বে সরকারকে সৈয়দপুর ট্রাস্টের ওই ৭০ শতক জমি উদ্ধার করতে হবে  এবং এর সাথে জড়িত প্রত্যেককে কঠোর আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে।

এখানেই শেষ নয়। ফুলতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব গাজী শাকিল আহমেদ এর বিরুদ্ধে আরো কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। যা আগামী প্রতিবেদনে তুলে ধরা হবে।