অপরাধের প্রবণতা কমে আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন হয়েছেঃ পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ

57
খুলনা ব্যুরো
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে নানমূখী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি অসহায় মানুষদের খাদ্য সহায়তা এবং পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এস এম শফিউল্লাহ ছুটেছেন খুলনার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। এক সময় খুলনা জেলা পুলিশের যে অফিস (পুলিশ সুপারের অফিস) ছিল ভুক্তভোগীদের অভিযোগের জন্য, করোনাকালে সেই অফিসে হরহামেশা দেখা যায় মানবিক সাহায্যের নানামুখী কর্মকাণ্ড। আবার অপরাধীদের জন্য এই পুলিশ পূর্বের চেয়ে অধিক আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে পূর্বের তুলনায় অপরাধ প্রবণতা কমে আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে জেলার প্রতিটি থানা এলাকায়। কমেছে মাদকের অপব্যবহার।
অদম্য সাহসিকতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও নীতি-আদর্শ এবং কর্তব্যের প্রতি অনড় থাকার পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধে খুলনাবাসীর হৃদয় ছুঁয়েছেন খুলনা জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ (বিপিএম)। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে সাধারণ মানুষদের রক্ষায় দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করতে গিয়ে নিজেই করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও থামেনি তার কর্মকাণ্ড। বিশেষ করে এ জেলার আওতাধীন সুন্দরবনে বন জীবীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, নিজস্ব অবৈধ পারমিট ব্যবস্থা চালু করে চাঁদা আদায়, আহরিত মধু, মাছ ও গোলপাতা লুট করা, অবৈধভাবে হরিণ শিকার করা, অবৈধ অস্ত্রের কেনা-বেচা করা এবং বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরা অবাধে চলতে থাকে। তাই সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা এবং সুন্দরবন কেন্দ্রিক জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা পুলিশ প্রতিনিয়ত অভিযান চালাতে থাকে। এ কারণে সুন্দরবনের অপরাধ প্রবণতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। জেলা পুলিশের তথ্যমতে সাম্প্রতিককালে ৬৮টি অস্ত্র, ৫টি ম্যাগাজিন, ১৩৫৩ রাউন্ড গুলি, ৬৩ কেজি হরিণের মাংস, ১৯৬ পিস বিভিন্ন প্রকারের কাঠ, একটি হরিণের চামড়া, ১০টি ডিঙ্গি নৌকা, এক হাজার দু’শো ফিট মাছ ধরার জাল ও ৪ বোতল কীটনাশক উদ্ধার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে ৬৫টি। ২০১৩ সাল হতে এ পর্যন্ত পুলিশি অভিযানকালে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ৫১ জন বন দস্যু। এই সুন্দরবনে বিগত দিনে অপরাধীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বাহিনীর নাম পরিচয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো। এদের মধ্যে ২০১৬ সালে মাস্টার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে কয়েক দফায় আরও কয়েকটি বাহিনীর সদস্যরা আত্মসমর্পণ করে। এ পর্যন্ত ১০৩ জন বন দস্যু আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। একারণে প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে জলদস্যু মুক্ত ঘোষণা করেছেন। পুলিশ সুপার শফিউল্লাহ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা আমি যে কোন মূল্যে রক্ষা করব। তিনি বলেন বর্তমান আইজিপি মহোদয়ের নির্দেশনা হচ্ছে পুলিশি সেবা জনগণের দৌর গোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। তাই সাধারণ মানুষের মাঝে পূর্বের পুলিশি ভীতি দূর করে বন্ধু সুলভ সম্পর্ক গড়ে তোলার কাজ করে চলেছি। বিশেষ করে কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি ও বিট পুলিশিং কার্যক্রম তারই অংশ। তিনি আরও বলেন, অপরাধ দমনে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।