যশোরে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং : নিরাপত্তাহীনতায় রেলওয়ে যাত্রী

40
আলী আকবার সম্রাট ।। ০৬:৩৫পিএম।। ০৬-১২-২০২১
যশোরের বন্দরনগরী  নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের আওতাধীন এলাকায়  অননুমোদিত অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং’এর কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে  রেলওয়ে দুর্ঘটনা। ফ’লে নিরাপত্তাহীনতায় যাতায়াত করতে হচ্ছে এই সকল রুটের যাত্রীদের।  শিল্পও বন্দরনগরী   নওয়াপাড়ার  ঘাট অধিকাংশ  গোডাউন ও বিভিন্ন কল-কারখানা গুলো নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায়। এ সমস্ত ঘাট গোডাউন ও কল-কারখানার মালামাল লোড- আনলোড করে যাতায়াতের জন্য রেলওয়ে পাটির উপর দিয়ে গড়ে ওঠে অসংখ্য অননুমোদিত অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং।  ক্রসিং গুলোয় গেটম্যান না থাকায়  একের পর এক ঘটতে থাকে রেলওয়ে দুর্ঘটনা। গত বছর রেলওয়ে দূর্ঘটনারোধে  সহকারী প্রকৌশলী ওয়ালিউল্লাহ স্টেট অফিসার (ডি.ও) নুরুজ্জামান সহ রেলওয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে রেলের পাটি দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়  ঝুকিপূর্ণ  অননুমদিত লেভেল ক্রসিং গুলো।
নওয়াপাড়া রেলওয়ের আওতাধীন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এখানে প্রাই ২৮ টার মত লেভেল ক্রসিং রয়েছে যার মধ্য ৬ টা ক্রসিং এর বৈধতা ও রক্ষণাবেক্ষণের রয়েছে রেলওয়ের গেটম্যান। তবে রেলওয়ে কতৃপক্ষের ভাষ্য মতে রেলওয়ে মালামাল লোড- আনলোড ও বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে সেখানে গেটম্যান দেওয়ার শর্তে কয়েকটা গেট খোলার অনুমতি দিয়েছে রেলওয়ে। এ সকল ক্রসিং গুলো ঘুরে  ভৈরব সেতুর ক্রসিং’এ আইয়ুব আলী নামের  একজন গেটম্যান পাওয়া গেলেও দু’পাশে  ছিলনা ক্রসিং। ক্রসিং’র এক পাশে একটি বেরিকেট দেওয়া অপর পাশে গেট না থাকায় নিরাপদ দুরুত্ব না মেনে চলন্ত ট্রেনের খুব কাছাকাছি থেকে কয়েকটা ট্রাক অপেক্ষা করছে ট্রেনটি যাবার।   বাকি ক্রসিং গুলোয় বেরিকেট ও একজন গেটম্যান দেওয়ার শর্ত থাকলেও সেগুলোয় কোন গেটম্যান পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, লেভেল ক্রসিং গুলো  বন্ধ করার পর  বিনা অনুমতিতে (শঁকুনি বটতলা) নামক স্থানে একটা গেট খুললে রেলওয়ে ভূ- সম্পত্তি’র কানুনগো বাদী হয়ে  রেলওয়ে নিরাপত্তায় নিয়জিত জিআরপি ও আরএনবি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করে, সে সময়  বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেন তৎকালীন  রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী এবং  রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি’র) এসআই সাইদুর রহমান রিপন।
হঠাৎ এসআই রিপনের বদলি হবার পর ১০ সেপ্টেম্বর  আরএনবি’র এসআই হিসাবে যোগদান করেন সোহাগ তিনি যোগদানের পর তিন মাস যেতে না যেতেই  রেলওয়ে কতৃপক্ষের কোন অনুমতি ছাড়াই একে একে খোলা শুরু হয় বেশ কয়েকটা অননুমোদিত লেভেল ক্রসিং।
বর্তমানে  ক্রসিং গুলো পূনরায়  খোলার কারণে রেলওয়ের আনন্দময় ভ্রমন আজ এসকল রুটের যাতায়াত-কারীদের জন্য হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ।
রেলওয়ে দূর্ঘটনার খবর এখন এ এলাকার  মানুষের সাপ্তাহিক রুটিনে পরিণত হয়েছে।
কয়েকজন যাত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায়, রেলওয়ে আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকার কারণে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই তাদের চলাচল করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে নওয়াপাড়া রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী আরএনবি’র বর্তমান এসআই সোহাগ শর্মা’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা দেখভাল করার দায়িত্ব অন্য বিভাগের।
নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার বুলবুল আহম্মেদ বলেন, আমি বিষয়টা খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করব।
ভূ- সম্পত্তি বিভাগের কানুনগো  মনোয়ারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা  রেলওয়ে প্রকৌশী বিভাগের আওতায়। ব্যক্তি স্বার্থে যদি কেউ রেলওয়ে অনুমতি ছাড়া লেভেল ক্রসিং খোলে সেটা সম্পূর্ন বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।
এ বিষয়ে রেলওয়ে প্রকৌশলী বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী ওলিউল্লাহ বলেন, রেলওয়ে  মালামাল লোড- আনলোডের সুবিধার্থে কয়েকটা গেট নিজ দায়িত্বে রক্ষণাবেক্ষণ ও গেটম্যান দেওয়ার শর্তে খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমি যশোরের বাইরে আছি কোন কোন গেট খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে এই মুহুর্তে আমি বলতে পারছি না।  তবে যদি কেউ শর্ত ভঙ্গ করে, তাহলে রেলওয়ে যাতায়াতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।