ফুলতলা উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মিজানের লাগামহীন অনিয়ম

266

আবু হামজা বাঁধন, ডেক্স রিপোর্ট।

খুলনার ফুলতলা উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মিজানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের পাহাড় জমে আছে। কর্তৃপক্ষ কোন কঠোর ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাকে বদলি আদেশ দিয়েছে। সরকারী চাকরির বিধির বাইরে গিয়ে দিনের পর দিন নানা অনিয়মের পাকা কারিগর হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট জমি মোটা অংকের টাকার বিনিময় নাম জারি করিয়ে দেওয়ার ডজন খানেক প্রমাণ রয়েছে। তাছাড়া অফিসের ফাইলপত্র টেবিল বদল করলেই সার্ভেয়ার মিজানকে খুশি করা লাগে।  সার্ভেয়ার মিজান তার চাহিদা মাফিক টাকার অংক পেন্সিল দিয়ে কাগজে লিখে দেয় , মুখে কোন পরিমাণ বলে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুহরি জানান, এ ভূমি অফিসের প্রতিটি কর্মচারীকে টাকা না দিলে কাজ নিয়ে ঘুরায়। ফলে আমরা সহজে কাজ উদ্ধারের জন্য সরকারি ফি এর বাইরে টাকা দিয়ে কাজ করিয়ে আনি।

সরকারী যে কোন শ্রেনীভুক্ত জমি হোক না কেন। টাকা দিলে মিজান সেই জমির নামজারি করিয়ে দিবে। এর সাথে সাবেক কর্মরত কয়েকজন এসিল্যান্ড সরাসরি জড়িত। এখানেই শেষ নয় ফুলতলায় সৈয়দপুর ট্রাস্টের নাউদারী মৌজা, জেল নং ১৫ ও এসএ দাগ নং ৫৬১ , আর এস দাগ নং ৬১০,  মোট ৭০ শতক জমি কয়েকযুগ ধরে অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন একটি মহল। তবে সৈয়দপুর ট্রাস্টের ওই ৭০ শতাংশ জমির অন্যতম কথিত মালিক শহিদুল ইসলাম খান সেনা সদস্য তমজিদ হোসেনের কাছে ০.০৭৮৫৭৫ একর জমি বিক্রয় করে। একে তো অবৈধ মালিক শহিদুল, তার উপর সৈয়দপুর ট্রাস্টের সম্পত্তি বিক্রয় করেছেন । সেনা সদস্য তমজিদের নামপত্তনের কাগজে দেখা যায় সার্ভেয়ার মিজান “অনুমোদন করা যেতে পারে” মর্মে নামজারীতে স্বাক্ষর করেছে। মোটা অংকের অর্থের বিনিময় সৈয়দপুর ট্রাস্টের এই সম্পত্তি কৌশলে সার্ভেয়ার মিজান নামজারি করতে সহায়তা করেছে।

ঘটনার পিঠে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য ও অভিযোগ রয়েছে সার্ভেয়ার মিজানের বিরুদ্ধে। ফুলবাড়িগেট তেলিগাতি মৌজায় মিজানের রয়েছে নান্দনিক দুই তলা ভবন। নামে বেনামে সম্পত্তি রয়েছে। সামান্য ছা-পোষা কর্মচারি হয়ে অর্থের পাহাড় গড়ে তুলেছেন এই সার্ভেয়ার। ফুলতলা উপজেলা ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মচারিদের ঘুষ বিনিময়ের জন্য রয়েছে নিজেস্ব সাংকেতিক চিহ্ন । বর্তমান ফুলতলা উপজেলা ভূমি অফিসের নতুন ভবনে ঘুষ লেনদেনের জন্য একটি দোকানে কাগজ ও  টাকা দিয়ে আসে দালাল সিন্ডিকেট । পরবর্তীতে ওই কাগজ সংগ্রহ করে কাজের দফারফা হয়। সকল কৌশলের মাস্টার মাইন্ড হলো সার্ভেয়ার মিজান এমন মন্তব্য স্থানীয়দের। তবে গেল কয়েকদিন আগে সার্ভেয়ার মিজানকে শাস্তিমূলক বদলি করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে এই বদলি হওয়াতে ক্ষোভ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তারা মিজানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া কয়েকজন ভুক্তভোগী জেলা প্রশাসক খুলনার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। সেই অভিযোগ আলোর মুখ দেখবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ বদলি সরকারী চাকরির একটি বৈশিষ্ট। বদলি কোন শাস্তি হতে পারে না। অচীরেই সার্ভেয়ার মিজান সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির কামনা করেছেন ফুলতলার মানুষ।

সার্ভেয়ার মিজানের সাথে কথা হয় ,“ তিনি বলেন আমার কোন মন্তব্য নাই, আমার স্যারের সাথে(এসি ল্যান্ড) কথা বলুন।

ফুলতলা উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি দীপা রানী সরকারকে মিজানের অনিয়মের বিষয় অবগত করলে তিনি উল্টো বলেন,“ আপনার অভিযোগ দিন, আমি তদন্ত করে দেখব” ।

প্রশ্ন থাকে একজন গণমাধ্যমকর্মী শুধু অভিযোগের বিষয় কর্তৃপক্ষকে অবগতই করতে পারে। এর বাইরে কোন অভিযোগ করার এখতিয়ার নাই। নানা প্রশ্নের ও রহস্যের তীরএখন এসি ল্যান্ডের দিকে আসছে। এতকিছু হয়ে যাচ্ছে অথচ এসিল্যান্ড কোন কিছুই আমলে নিচ্ছে না।  পরবর্তী অনুন্ধানে বিস্তারিত আসছে।