রাত পোহালেই খুলনা আওয়ামী লীগের সম্মেলন 

190
মোঃ আল আমিন খান, খুলনা ব্যুরো   
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর সার্কিট হাউস ময়দানে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য। প্রধান অতিথি থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরো অতিথি হিসেবে থাকবেন বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত দলীয় কার্যালয়। শহরজুড়ে আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু ছিল আগামী তিন বছরের জন্য কারা হচ্ছেন জেলা ও নগরের চালক। দলের নগর সভাপতি ও সিটি মেয়র আলহাজ তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, সম্মেলন বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের কাজ শেষ হয়েছে। খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, কে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন সেটা দলের হাইকমান্ডই বলতে পারবে। দলের দুর্দিনে যাদের ত্যাগে আজকের সংগঠন দাঁড়িয়ে আছে তারাই নেতৃত্বে আসুক- সেটাই আমরা প্রত্যাশা করি। তবে দলীয় সূত্রে জানা যায়, ইলেকশন নয়, সিলেকশনেই দলের নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নগরের বর্তমান সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান স্বপদে বহাল থাকতে পারেন। অনুরূপ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদও স্বপদে বহাল থাকছেন। শুধু সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ আসতে পারে। খুলনা মহানগর কমিটিতে সভাপতি পদে কারও নাম শোনা না গেলেও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানকে গত সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় দেয়া এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হওয়ার পর অনেকটা কোণঠাসা অবস্থায় আছেন তিনি। এক সময়ের সঙ্গীরাও তাকে আগের মতো সময় দেন না। এসব কারণে নেতাকর্মীরা মনে করছেন সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদটি হয়তো এবার তার হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সাংগঠনিক দক্ষতা এবং সামাজিক অবস্থানে এগিয়ে আছেন সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। নতুনদের মধ্যে সাংগঠনিক ও সামাজিক কার্যক্রমে বেশি সক্রিয় হিসেবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে পরিচিত তিনি। এছাড়া আরও যারা প্রার্থী রয়েছেন তারা হলেন- দলের যুগ্ম সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, আশরাফুল ইসলাম ও আবুল কালাম আজাদ কামাল, দৌলতপুর থানা আ’লীগের সভাপতি সৈয়দ আলী, মহানগর যুবলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান পপলু। এদিকে খুলনা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। জেলা ও নগর দুটি শাখার সম্মেলন একই দিনে। কারা আসছেন নেতৃত্বে এমন আলোচনায় মুখর সর্বত্র। কাউন্সিলরদের ভোটে নাকি কেন্দ্রের শীর্ষ নেতাদের পছন্দে নেতৃত্ব নির্বাচন হবে- এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে। তবে শেষ পর্যন্ত সিলেকশনেরই আভাস দিচ্ছেন ঊর্ধ্বতন নেতারা। গুরুত্বপূর্ণ পদ চারটিতে প্রার্থীর সংখ্যা একাধিক। ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় দলের হাইকমান্ড এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।অপরদিকে জেলা শাখায় সভাপতি পদে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শেখ হারুনুর রশীদই থাকছেন এমনটাই শোনা যাচ্ছে। দলের দুঃসময়ে তার অবদান স্মরণ রেখেই দল তাকে পুনরায় সভাপতি হিসেবে রাখতে পারে। তবে জটিলতা বেড়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে। সাধারণ সম্পাদকের প্রার্থী তালিকায় আছেন জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল ও আকতারুজ্জামান বাবু এমপি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অসিত বরণ বিশ্বাস ও বটিয়াঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম খান। প্রত্যেকেই পদটি পেতে ঊর্ধ্বতন নেতাদের নজর কাড়তে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা সভাপতি রাজনীতি ও বয়সে প্রবীণ হওয়ায় সাধারণ সম্পাদক পদে এবার তারুণ্যকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রার্থীদের মধ্য থেকে তাদের আমলনামা বিশেষ করে পরিচ্ছন্ন ইমেজ, ত্যাগী ও কর্মীবান্ধব নেতৃত্ব গুণ খুঁজে দেখা হচ্ছে। প্রার্থী নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামাল হোসেন বলেন, কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।