যশোর জেলায় এসিড ব্যবহারের বিধি মানছে না জুয়েলার্স মালিকরা

191
উৎপল ঘোষ. [ক্রাইম রিপোর্টার,যশোর]
যশোর জেলায় এসিড নিঃসৃত ধোঁয়া এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবেশের জন্য। শহরে গড়ে ওঠা অধিকাংশ জুয়েলারির কারখানার মালিকরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও অনুগত্য না হয়ে তাদের এ ব্যবসা বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। ⬆কারখানাগুলো থেকে নির্গত হচ্ছে এসিড পোড়ানো গ্যাস। গ্যাসের তীব্র বিষক্রিয়ায় শহরের বাসিন্দারা রয়েছে স্বাস্হ্য ঝুঁকিতে।শ্বাসকষ্ঠ,হৃদরোগ চক্ষুসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এখানকার মানুষ।ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি রয়েছে যশোর সদর ও শিল্প শহর নওয়াপাড়ায়।  অন্যান্য জায়গায় আছে তার মধ্যে উল্লেখ কেশবপুর,চৌগাছা,বাঘারপাড়া,মনিরামপুর বেনাপোল,ঝিকরগাছা,ছোট ছোট বাজার গুলোতে সোনার দোকান রয়েছে অগনিত।অনেকের নামে মাত্র ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। পরিবেশের ছাড়পত্র কি জিনিস তাদের তা জানাও নেই।

এ ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন খোদ স্বর্ণ কারিগররা। স্থানীয়দের অভিযোগ, এখানকার অধিকাংশ জুয়েলারি কারখানার পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই।এসিড ব্যবহারের নিতীমালা মানছে না কেউ।

এসিডে যথেচ্ছা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মালিক সমিতিকে অবহিত করেছেন অনেকে।তাতে প্রতিকার পায়নি শহরবাসী।তাদের অভিযোগ, এখানকার কারখানার কাজে ব্যবহৃত নাইট্রিক এসিড ও সালফিউরিক এসিড নিঃসৃত ধোঁয়া কারখানার স্বল্প দৈর্ঘ্য পাইপ দিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে পাশের বাড়ি ঘরে ও বাসা বাড়ীতে।দরজা-জানালা বন্ধ করেও রক্ষা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।ফলে জনজীবন বিপর্যস্হ হয়ে পড়েছে।যশোর সোনা পট্রির সংলগ্ন সঞ্চয়,৫০()করিম, (৩৯)আঃ রাজ্জাক (৬৯)ও সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র জুয়েল (২০)জানান, এসিডের ধোঁয়ায় শুধু পরিবেশ দূষণ হচ্ছে না।মানব দেহের জন্য মারাক্তক খতিকর।অনেক মালিক ও কারিগররা রাস্তার ধারে সোনা গলানোর কাজ করেন। ফলে এসিডে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে। এসিডের ঝাঁঝে পথ চলতে কষ্ঠ হয়।শিশুদের শ্বাস-কষ্ট নিতেও অসুবিধা হয় বেশি।যশোর যশোরের জর্জ কোটের আইনজীবি জন জানান,আইন অনুযায়ী রাস্তার ধারে এসিডের ব্যবহার বেআইনী।একটি নির্ধারিত ঘরে ব্যবহারসহ ধোঁয়া নির্গমনে কমপক্ষে ১০০ফিট পাইপ দিয়ে উপর দিকে প্রবাহিত করতে হবে। যাতে এসিডে ধোঁয়া মানুষের নাকে না লাগে বা মানুষের কোন             ক্ষতি না হয়।স্বর্ণ কারখানার প্রবীর ও গনেশ জানান,কারখানায় কাজ করতে গেলে নাক মুখ জ্বালা পোড়া করে।তিনি আরো জানান,এ কাজে জটিল রোগ হতে পারে এমন আশঙ্খা নিয়েই শুধু জীবন কাটানোর জন্য এ কাজ করতে হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই জনএসিড ব্যবসায়ী জানান,প্রতিমাসে এসিড বিক্রি করে থাকি অন্তত দুই টন।তবে আমরা কোনো সাধারণের নিকট বিক্রি করি না।স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা ঝর্ণা রানী ঘোষ বলেন,নাইট্রিক এসিডের ধোঁয়ায় শুধু মানব দেহের ক্ষতি করে না।আশপাশের পরিবেশও দূষণ করে। তাছাড়া যে বৃক্ষ আমাদের দিনের বেলায় অক্মিজেন দেয় আর রাতের বেলায় কার্বনডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে।আজকে সেই বৃক্ষ ও ফলজ গাছ শেষ হয়ে প্রায় মরতে বসেছে।তিনি আক্কেপ আরো করে বলেন,এলাকার গাছপালার ফল পাতাও বিবর্ণ হয়ে পড়েছে।টিনের চালের চালাগুলো রাসায়নিকের প্রভাবে ঝাঝঁরা হয়ে ঝরে পড়ে।যাঁরা সোনার ব্যবসা করেন তারা বেপরোয়া।নামমাত্র উপজেলা ভিত্তিক হাত গুনা ৫/৭জনের কাগজপত্র থাকতে পারে বলে নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়।এসিডের ক্ষেত্রে বিধি বাম।জেলার হিসাব আরো ব্যতিক্রম।এমন অভিমত শহর ও নগরবাসীর।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যলয়ের ডাক্তার দিলীপ বড়ুয়া জানান,এসিডের ধোঁয়া মানব দেহের  জন্য ক্ষতিকারক।এই ধোঁয়ার কারণে মানুষের শ্বাসকষ্ঠ,চর্মরোগ হতে পারে।এমনকি হৃদরোগসহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের জানান,আবাসিক এলাকায় কোনভাবেই এসিড পোড়ানো যাবে না।নিয়মানুসারে প্রতিটি কারখানা স্থাপনের সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতিপত্র নিতে হবে।যশোর জেলায় অনেক কারখানায় অনুমতিপত্র নাই।এসব অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেন।জেলা প্রশাসক জানান এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাননি।তিনি বলেন অভিযোগ পেলে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলা হবে এবংতদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণসহ সামাজিক উদ্বৃদ্ধকরণ ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।