আবু হামজা বাঁধন, ডেক্স রিপোর্ট।
খুলনা ফুলতলা কৃষি ব্যাংকের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত ব্যাংক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের ঘুষ কেলেংকারীর ৯ দিন অতিবাহিত হলেও কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক কোন আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এদিকে দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে আমিনুলের অপরাধ জগতের ফিরিস্থি বেরিয়ে আসছে। এক সময়কার জামায়াত ইসলামের সক্রিয় নেতা ছিলেন আমিনুল ইসলাম ওরফে নজরুল। জামায়াতের শীর্ষ নেতারা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে আমিনুল ইসলাম জামায়াত ইসলামের রাজনৈতিক কর্মকান্ড গোপনে চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন এই ব্যাংক কর্মকর্তা।
জানাযায়, ডুমুরিয়া উপজেলার কোমরাইল গ্রামের মৃত মেহের আলী সরদারের ছেলে আমিনুল ইসলাম। পিতা ছিলেন একজন কৃষক। আমিনুল ইসলাম তার গ্রামে নজরুল নামে পরিচিত। এছাড়া তাঁর স্ত্রী একজন শিক্ষিকা। সাম্প্রতিক আমিনুলের পূত্র তিতাস পেশকারের চাকরিতে যোগদান করেছেন। অনেকটা স্বচ্ছল থাকা স্বত্বেও থেমে থাকেনি আমিনুল ইসলামের অবৈধপথে অর্থ উপার্জনের পন্থা। কৃষি ব্যাংকের যখন যে শাখায় দায়িত্বে ছিলেন, সেখানেই আমিনুল সিন্ডিকেট গড়ে তুলে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। ফুলতলা কৃষি ব্যাংক অনিয়মের চাকা কিছু দিন বন্ধ থাকলেও , আমিনুল ইসলামের যোগদানের পর থেকে অনিয়মের চাকা আবার ঘুরতে শুরু করেছে।
এখানেই শেষ নয়। এবার আসা যাক আমিনুল ইসলামের অপরাধ জগতের সাতকাহন নিয়ে। গ্রামে অট্রলিকা না গড়লেও গোপনে খুলনার সোনাডাঙ্গা, ডুমুরিয়া সহ বিভিন্ন অঞ্চলে নামে বে নামে জমি কিনিছেন, যেখানেই জমি পান সেখানেই জমি কিনতে চলে যান বলে জানিয়েছে কোমরাইল গ্রামে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি।
রঘুনাথপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দেলোয়ার বলেন, কোমরাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মরহুম বাহারুল ইসলাম বেঁচে থাকাকালীন আমিনুল জামায়াতের বিভিন্ন গোপনীয় মিটিং ও প্রচার প্রচারনা এলাকায় চালিয়ে আসত।
এছাড়া বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন আমিনুলের প্রভাবের কাছে অনেকে জিম্মি ছিলো বলে জানাযায়।
ধামালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেজোয়ান মোল্যা জানান, আমিনুল ইসলাম গ্রামের দিকে নজরুল বলে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ শুনেছি।
এবার আসা যাক ফুলতলা কৃষি ব্যাংকের দিকে। আমিনুল এ ব্যাংকে দায়িত্বে থাকাকালীন সারা মাসে লোন গ্রহীতাদের কাছ থেকে লোন দেওয়ার নামে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে ভাগ করে দিত কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের মাঝে। তবে ফুলতলা কৃষি ব্যাংকের অঘোষিত সেকেন্ড ম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন আমিনুল ইসলাম। এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন গ্রাহকদের কাছ থেকে সুদ মওকুফের কথা বলে হাতিয়ে নিত মোটা অংকের অর্থ। মশিয়ালী গ্রামের অনেক মানুষ এখনও আমিনুল ইসলামের কাছে জিম্মি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যাক্তি জানান, আমরা লোন নেওয়ার জন্য অগ্রিম আমিনুলকে টাকা দিয়েছি। এখন যদি আমরা অভিযোগ করি , তাহলে আমরা তো লোন পাবো না, বরং আমিনুলকে যে টাকা দিয়েছি তাও ফেরৎ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
কৃষি ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার (খুলনা বিভাগ) শফিউল আজম বলেন, আমিনুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে আগে তাকে ফুলতলা থেকে বদলি করা হয়েছে।
আমিনুল ইসলামের ব্যবহারিত মুঠোফোন 01715——–16 নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস এন্ড হেলথ্ কেয়ার সোসাইটির খুলনা জেলার কর্মকর্তা শেখ ইউনুস আলী বলেন, আমিনুল ইসলামের ঘুষ গ্রহণের স্পষ্ট ভিডিও এবং তার ঘুষ চাওয়ার স্বীকারক্তি থাকার পরেও দৃশ্যমান কঠোর কোন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন না করে কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমিনুলের পক্ষেই গান গেয়ে যাচ্ছেন। তবে একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে আমার মন্তব্য হলো আমিনুলের মত দূর্ণীতি পরায়ন কর্মকর্তাদের কৃষি ব্যাংকের মত স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে অতিদ্রুত বিদায়ের টিকিট ধরিয়ে দেওয়া হোক।
আগামী প্রতিবেদন আসছে………………….