পদ্মার বুকে উল্লাস

121

টাইগার শোয়েবকে দেখা গেল পদ্মার বুকে। আর উল্লাসে গলা ছেড়ে তার একটাই স্লোগান, ‘শাবাশ বাংলাদেশ, বিজয় বাংলাদেশ।’

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরনাছিপুর গ্রামের শোয়েব আলী বোখারি। ২০০৮ সালে পদ্মার ভাঙনে বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়া শোয়েবের পরিবারের আশ্রয় এখন ঢাকা শহরে। মোটর মেকানিক শোয়েবের আরেক পেশা সে উবারচালকও। খেলা পাগল শোয়েব প্রিয় দলের প্রতিটি খেলায় মাঠে উপস্থিত হয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাজে। উল্লাসে মাতানো শোয়েব কখনো পেয়েছেন জয়ের আনন্দ, কখনো ছিল পরাজয়ের বেদনা।

তবে বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) শোয়েবের উল্লাস যে ছিল শুধু জয়ের। সেখানে ছিল না পরাজয়ের শঙ্কা। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে, বিভিন্ন ক্ষমতাধরদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো তৈরি করেছে বাংলাদেশের। সেতুর সবশেষ অর্থাৎ ৪১তম স্প্যান স্থাপনের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ স্বচক্ষে দেখার লোভটি সামলাতে না পেরে অন্যদের মতো পদ্মার বুকে অবস্থান নেয় টাইগার শোয়েব।

দেশের জাতীয় পতাকা বুকে ধারণ করে বৃহস্পতিবার পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসানো দেখতে ছোট একটি নৌকায় চড়ে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের কাছে অবস্থান নিয়েছিলেন শোয়েব।

উল্লাসে মেতে ওঠা শোয়েব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি যখন জাতীয় পতাকা নিয়ে মাঠে যাই, তখন হারজিতের শঙ্কা থাকে। কিন্তু আজ শুধুই বিজয়। জাতীয় পতাকার মতোই পদ্মার বুকে আজ দাঁড়িয়ে গেল আমাদের গর্বের পদ্মা সেতু। বিজয়ের মাসে বিশ্ববাসী এই ঐতিহাসিক ক্ষণের সাক্ষী হয়েছে। আমিও জাতীয় পতাকা বুকে ধারণ করে পদ্মায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। দেশের এমন মাহেন্দ্রক্ষণেই তো জাতীয় পতাকা বুকে জড়ানো যায়। এ এক অন্য রকম বিজয়। ১৮ কোটি মানুষের বিজয়। বিশ্ববাসী বাঙালির এ বিজয় প্রত্যক্ষ করেছে।’

শোয়েব আলী আরও বলেন, ‘পদ্মাপারের মানুষ আমরা। পদ্মা আমাদের নিঃস্ব করেছে। জীবন-জীবিকা হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে বাঁচতে হচ্ছে। সেই পদ্মার বুকে স্বপ্ন দাঁড়িয়ে যাওয়ার এ এক অন্য রকম আনন্দ। এই সেতু পদ্মাপারের কোটি মানুষের ভাগ্য বদলে দেবে।’