ফুলতলা ভূমি অফিসে রাত ১২টায় নেওয়া হয় খাজনা

211

ডেক্স রিপোর্ট।।

খুলনার ফুলতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে রাত ১২টা পর্যন্ত নেওয়া হয় খাজনা। গভীর রাতে খাজনা আদায় হয় নাকি অন্যকিছু আদায় হয় তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। অন্যদিকে উপরি না দিলে খাজনা আদায় হয় না। ঘুরতে হয় মাসের মাস। এতসব অনিয়মের কারিগড় এ ভূমি অফিসের নায়েব এস এম ইলিয়াস হোসেন। তাঁর যোগদানের পর থেকেই শুরু অনিয়মের দৌড় প্রতিযোগিতা। ভূমি অফিসের তালা খোলা হয় কাক ডাকা ভোরে। আর তালাবদ্ধ হয় মধ্য রাতে। কোন বিরাম নেই। একটানা খাজনা আদায় হয়। বাইরের থেকে দেখলে মনে হবে নায়েব  ইলিয়াস সরকারি রাজস্ব আদায়ের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। অথচ সব কিছুই লোক দেখানো। মুলত: রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি ব্যাক্তিগত তহবিলও আদায় করছে সেবা প্রত্যাশিদের কাছ থেকে। খাজনার রশিদের ১০০ টাকা আদায় হলে নায়েব ইলিয়াসকে দিতে হয় ১ হাজার টাকা।

অর্থাৎ ১০গুণ বেশি টাকা না দিলে কোনভাবেই মিলবে না ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা আদায়ের রশিদ। এখানেই শেষ নয়। খাজনার পাশাপাশি মিউটেশনের কাজ করে থাকেন  এই নায়েব। দীর্ঘ দিন ফুলতলা উপজেলায় এসি ল্যান্ড পদে নির্ধারিত কেউ না থাকার কারণে ইলিয়াস নায়েবের নামজারির ব্যবসায় কিছুটা ভাটা পড়ে। ফলে খাজনা আদায়ের উপরির চার্জ বৃদ্ধি করেন।

ফুলতলার পয়গ্রাম মৌজার সৈয়দ মহাসিন আলীর রেকর্ডীয় সম্পত্তির  ৩৪৮নং খতিয়ানের ৫৪৪ দাগের .১৫ একর জমির খাজনা দেন। খাজনার রশিদে টাকার পরিমান দেখা যায় ১,৯১৫/= টাকা অথচ নায়েব ইলিয়াস মহাসিন আলীর কাছ থেকে সর্বমোট ৬হাজার টাকা নেয়।

বেজেরডাঙ্গার ডাঃ ওহাব বলেন, নায়েব ইলিয়াসের কাছে খাজনা দিতে গেলে আমার কাছে ১৮ হাজার টাকা দাবি করেন, আর বলেন বেশি কথা বললে ২৪ হাজার টাকা দেওয়া লাগবে।

দক্ষিণডিহি রবীন্দ কমপ্লেক্স এলাকার নিতাই চন্দ্র করের ছেলে হিরক কর জানান, আমি খাজনা দিতে গেলে দুই দিন আমাকে রাত ১২ পর্যন্ত নায়েব (ইলিয়াস)  তাঁর অফিসে বসায় রাখে।

নায়েব এস এম ইলিয়াসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি আমার দোষ স্বীকার করে নিলাম, আমি আর অতিরিক্ত খাজনা নেব না।

ফুলতলা উপজেলায় বর্তমান অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা  এসি ল্যান্ড আরিফুল ইসলাম বলেন,  রাত পর্যন্ত অফিস খোলার বিষয় নায়েব ইলিয়াসকে আমি নির্দেশ দিয়েছে বিকাল সাড়ে ৫টার মধ্যে অফিস বন্ধ করতে। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের বিষয় প্রমাণসহ অভিযোগ থাকলে ডিসি স্যার বা এডিসি রাজস্ব স্যার ব্যবস্থা নিবেন।

ফুলতলা উপজেলার মানুষ এই সীমাহিন অনিয়মের হোতা নায়েব ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। সেই সাথে ভূমি অফিসগুলোতে কর্তৃপক্ষের নিবিড় পর্যাবেক্ষনের মাত্রা বৃদ্ধি করার পরামর্শ দেন সচেতন মহল।