সাকিব লিটনের আঘাতে লন্ডভন্ড ক্যারিবীয় শিবির, ঐতিহাসিক জয়, প্রধানমন্ত্রীর অভিন্দন

290
সাকিব-লিটনের দূর্ধস আঘাতে লন্ডভন্ড  হয়ে যায় ক্যারিবীয়দের জয়ের আশা। এটি একটি  ঐতিহাসিক জয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য। এ দিকে জয়ের পরমূহুর্ত  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাহিসনা টাইগারদের  অভিন্দন জানিয়েছেন ।
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে একটি টর্নেডো আঘাত হেনেছে। সেই টর্নেডোর নাম সাকিব-লিটন। এক ঝটকায় লণ্ডভণ্ড করে দিলো ক্যারিবীয়দের। দফায় দফায় ঝড়। কিছুতেই থামছিল না। অনেক চেষ্টা করেও লাভ হলো না। সাকিব-লিটন আঘাতে চুরমার সবকিছু।

পাঠক ভাবতে পারেন কি আবোল-তাবোল বলা হচ্ছে। হ্যাঁ, এটাই সত্যি।

ক্যারিবীয়দের কাঁপানো হয়েছে। সেটা কাঁপালেন বাংলার টাইগাররা। ঝড়ের উৎপত্তিস্থল ইংল্যান্ডের টন্টনের কাউন্টি গ্রাউন্ড মাঠে। শুরুটা তামিম-সৌম্যই করেছিলেন। তবে তাদের বিদায়ে মন খারাপ হয়েছিল টাইগার ভক্ত সমর্থকদের। অবশ্য সেটা পুষিয়ে দিয়েছেন সুপারস্টার সাকিব আল হাসান। তার সঙ্গী লিটন দাশ। একজনের সেঞ্চুরি আরেকজনের হাফ সেঞ্চুরি। এতেই বেসামাল ক্যারিবীয় শিবির। সাকিব-লিটন- টাইগারদ্বয়ের কাছে পাত্তাই পায়নি ক্যারিবীয় বোলাররা।

উইন্ডিজের ছুঁড়ে দেয়া ৩২১ রানের বড় স্কোর টপকাতে গিয়ে আজ টন্টনের মাঠে বিশ্বকাপের ২৩তম ম্যাচে মোটেও বেগ পেতে হয়নি। সাকিব, তামিম, লিটনদের চার-ছক্কায় ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। অভিনন্দন বাংলাদেশ। অভিনন্দন টাইগার।
৩২২ রানের জবাবে সৌম্য করেন ২৯, তামিম ৪৮ ও মুশফিক আউট হন ১ রানে। এরপর শুধুই সাকিব-লিটনের গল্প। সাকিব ৯৯ বলে অপরাজিত থাকেন ১২৪ রানে। আর লিটন দাস ৬৯ বলে ৯৪ করে অপরাজিত থাকেন। ৫১ বল বাকী থাকতেই জয়ের বন্দরে বাংলাদেশ। ম্যাচ সেরা হন সাকিব আল হাসান।

আসরে টিকে থাকতে আজ টাইগারদের উইন্ডিজবধ ছিল খুবই জরুরি। সে মিশনে টস জিতে ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংয়ে পাঠান কাপ্তান মাশরাফি। প্রথম ১০ ওভারে সফল তাদের বোলিং অ্যাটাক। কিন্তু হেটমায়ার, হোপ আর লুইসদের মারমুখী ব্যাটিং উইন্ডিজদের স্কোর নিয়ে যায় অন্য উচ্চতায়। তিনশ’র বেশি রান জমা পড়ে স্কোর বোর্ডে। স্কোরবোর্ডে এত রান হওয়ায় টাইগার শিবিরে খানিকটা চিন্তার ভাঁজ ফেললেও নিরাশ হননি ভক্ত সমর্থকরা।

এরআগে, ক্যারিবীয়দের ইনিংসজুড়ে ছিলো শাই হোপের নাম। তার অনবদ্য ৯৬ রানের ইনিংসে ভর করেই এগিয়ে যায় তারা। যদিও মোস্তাফিজের আঘাতে ফেরায় ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ না করা হয়নি তার। এছাড়াও ৭০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন এভিন লুইস। আর ফিফটির দেখা পেয়েছেন শিমরন হেটমায়ারও। উইন্ডিজদের মোট ৭ উইকেট তুলে নেয় টাইগার বোলাররা।

লক্ষ্যটা আরো বড় হতে পারতো। সেটা সম্ভব হয়নি কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের কাটারে। নিজের ৬ষ্ঠ ওভারে তিনি ফেরান হেটমায়ারকে। আর ভয়ংকর আন্দ্রে রাসেল হাত খোলার আগেই কাটা পড়েন কাটারে। আর শেষের দিকে শাই হোপের উইকেট নেয়ায় রানের চাকা কিছুটা মন্থর হয়। মোস্তাফিজ ও সাইফউদ্দিন নেন ৩ উইকেট করে আর ২টি উইকেট পকেটে পুরেন সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে তিনটায় শুরু হয় ম্যাচটি। বাংলাদেশ দলে আজ ফিরেছেন লিটন দাশ। মিঠুনের পরিবর্তে একাদশভুক্ত হয়েছেন তিনি।

বিশ্বকাপের আসরে এ পর্যন্ত চারটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ২টি ম্যাচ জয় ও বাকি দুটি ম্যাচ ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে হার দেখতে হয়েছে টাইগারদের। এছাড়া বৃষ্টিতে পন্ড হয়েছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি। এদিকে বিশ্বকাপের এবারের আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থাও বেশ নড়বড়ে। পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে একটি পরিত্যক্ত এবং তিন খেলায় হার।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-উইন্ডিজ
বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত দুদলের পাঁচ দেখায় তিনটিতেই জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর আজ জয় পেল টাইগাররা। আর একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে।

ওয়ানডেতে যত হিসাব-নিকাশ
এ যাবৎ টাইগার বাহিনী ও ক্যারিবীয়দের মধ্যে ৩৮ ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টিতে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২১টিতে জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।

পরিসংখ্যানের হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এগিয়ে থাকলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে মাশরাফিদের পাল্লাই ছিল ভারী। সবশেষ আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে সবকটি ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে টাইগাররা। এর মধ্যে ফাইনাল ম্যাচে  বড় ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ।